কোনো কারণ ছাড়াই মাত্র আট কর্মদিবসে ন্যাশনাল টি কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ারের দাম বেড়েছে ২১০ টাকা। এতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ৬৬ লাখ শেয়ারহোল্ডারদের লাভ হয়েছে ১৩৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিএসইর তথ্য মতে, গত ২১ আগস্ট ১৯৭৯ সালে তালিকাভুক্ত ন্যাশনাল টি’র শেয়ারের দাম ছিল ৬১২ টাকা ৪০ পয়সা। সেই শেয়ার ৩১ আগস্ট সর্বশেষ বিক্রি হয়েছে ৮২২ টাকা ৫০ পয়সায়। অর্থাৎ আট দিনে কোম্পানিটির প্রতি শেয়ারের দাম বেড়েছে ২১০ টাকা ১০ পয়সা।

সে হিসাবে প্রতিটি শেয়ার ২১০ টাকা ১০ পয়সা করে ১৩৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা লাভ বা মুনাফা হয়েছে। তাতে কোম্পানিটির বাজার মূল্য ৪০৪ কোটি ১৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা থেকে ৫৪২ কোটি ৮৫ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

কোম্পানির তথ্য মতে, বর্তমানে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ন্যাশনাল টি’র মোট ৬৬ লাখ শেয়ার রয়েছে। ১০ টাকার শেয়ার ৮২২ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি হওয়া ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা কোম্পানির বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে ৫৪২ কোটি টাকা।

হঠাৎ কোম্পানির শেয়ারের দাম বৃদ্ধিকে অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, শেয়ারটিতে কারসাজি হচ্ছে। দ্রুত কারসাজি চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। তা না হলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

বিষয়টি মাথায় রেখে ডিএসই কোম্পানির কাছে অস্বাভাবিক হারে দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়েছে। কোম্পানি তার উত্তরে ডিএসইকে জানায় যে, দাম বৃদ্ধির পেছনে তাদের কাছে কোনো সংবেদনশীল তথ্য নেই।

এ বিষয়ে নাম না প্রকাশের শর্তে ডিএসইর সাবেক এক পরিচালক ঢাকা পোস্টকে বলেন, কোম্পানির জুলাই ২০২১ থেকে ৩০ জুন ২০২২ সমাপ্ত বছরের লভ্যাংশ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শেয়ারের দাম কিছুটা বাড়তে পারে। কিন্তু ২০০ টাকার বেশি দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিকতা দেখি না। 

তিনি বলেন, খালি চোখেই দেখা যায় এখানে কারসাজি হচ্ছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিত যারা এই কারসাজির সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

কোম্পানিটি সর্বশেষ ৩০ জুন ২০২১ অর্থবছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নগদ ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। তার আগের বছর ২০২০ সালে শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ এবং তার আগের বছর ২০১৯ সালে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।

বর্তমানে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৪৮ দশমিক ৪০ শতাংশ শেয়ার, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ শেয়ার। এছাড়াও সরকারের কাছে রয়েছে কোম্পানির ৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে কোম্পানির ৩৮ দশমিক ৫২ শতাংশ শেয়ার।

খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানির রিজার্ভ রয়েছে ৪৯ কোটি ২ লাখ টাকা। ২০২১ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে কোম্পানির ব্যাংক ঋণ রয়েছে ২০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে স্বল্প মেয়াদি ঋণ রয়েছে ১৩৭ কোটি ১৮ লাখ ১ হাজার টাকা। আর দীর্ঘমেয়াদি ঋণ রয়েছে ৬৩ কোটি ৩১ লাখ ৯ হাজার টাকা।

এমআই/এসকেডি