কোম্পানি লোকসানে, কারখানাও বন্ধ। ঋণ খেলাপির দায়ে মালিকের খোঁজ নেই। তবুও বাড়ছে রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের (আরএসআরএম) শেয়ারের দাম।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য মতে, মাত্র পাঁচ দিনে আরএসআরএমের শেয়ারের দাম বেড়েছে ৬ টাকা ৪০ পয়সা। শতাংশের হিসাবে যা ৩৭ শতাংশ। এর আগে ২২ আগস্ট শেয়ারটি বিক্রি হয়েছিল ১৭ টাকায়। আর গত ২৯ আগস্ট বিক্রি হয়েছে ২৩ টাকা ৪০ পয়সায়।

এদিকে লোকসানে থাকার পরও কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বৃদ্ধিকে অস্বাভাবিক হিসেবে দেখছে ডিএসই। এর পেছনে অনিয়ম কিংবা মূল্যসংবেদনশীল কোনো তথ্য আছে কিনা তা জানতে চেয়ে আরএসআরএমকে চিঠি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। চিঠির জবাবে ডিএসইকে জানানো হয়েছে, দামবৃদ্ধির পেছনে মূল্য সংবেদনশীল কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই।

পরে এই তথ্য ডিএসইর ওয়েবসাইটে প্রকাশের পর গতকাল (৩০ আগস্ট) কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৬০ পয়সা কমেছে।

দামবৃদ্ধির পাঁচ দিনে মধ্যে গত রোববার (২৮ আগস্ট) কোম্পানিটির শেয়ারের সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে। ওইদিন আরএসআরএম ২৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৯৬টি শেয়ার লেনদেন হয়। তারপর মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) লেনদেন হয়েছে ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৭৩৭ টাকার শেয়ার।

কোম্পানির তথ্য মতে, ৪০ কোটি টাকা বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের কারণে প্রায় এক বছর ধরে আরএসআরএমের কারখানার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। তারপর নতুন করে ঋণ খেলাপির দায়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাকসুদুর রহমান ৮ জুন গ্রেপ্তার হন। তারপর থেকে মালিকেরও খোঁজ নেই। কোম্পানিটির বিরুদ্ধে শুধুমাত্র সোনালী ব্যাংকেরই ১২টি মামলা রয়েছে।

এছাড়া, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান রতনপুর গ্রুপের কাছে ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। ঋণ খেলাপির দায়ে মাকসুদুর রহমানসহ অন্যান্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রয়েছে ২০টিরও বেশি মামলা।

জানা গেছে, কোম্পানিটির কাছে সোনালী ব্যাংক ২০১ কোটি ৪৩ লাখ ৫২ হাজার ৮৬৫ টাকা পাওনা রয়েছে। এই টাকার বিপরীতে চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকায় গ্রুপটির কারখানাসহ ১০০ শতক জমি বন্ধক রয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ২০১৪ সালে পুঁজিবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলন করে আরএসআরএম। বর্তমানে কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ। ২০২০-২১ অর্থবছরে কোম্পানিটিকে শেয়ারপ্রতি ৩ দশমিক ৭৫ টাকা লোকসান গুণতে হয়েছে।

এমআই/এমএইচএস