বাজার মূল্যের পরিবর্তে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা (এক্সপোজার লিমিট) গণনার পদ্ধতি ক্রয়মূল্যে করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 

বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন বিভাগের পরিচালক আব্দুল মান্নান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতিপত্র দেওয়ার দুই দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নিল। যা অবিলম্বে কার্যকর হবে। আর এ সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারের জন্য সুফল বয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। 

আরও পড়ুন>> পুঁজিবাজারে আসতে হলে ১০ শতাংশ শেয়ার ছাড়তে হবে

এর আগে গত ২ আগস্ট (মঙ্গলবার) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা (এক্সপোজার লিমিট) বাজার মূল্যের পরিবর্তে ক্রয়মূল্যে গণনার বিষয়টি বিবেচনার পক্ষে মতামত দিয়েছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়, ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ধারা ২৬ক এর উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ব্যাংক-কোম্পানি কর্তৃক অন্য কোনো কোম্পানির শেয়ার ধারণের হিসাবায়নে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা (এক্সপোজার লিমিট) নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃক ক্রয়কৃত মূল্যকেই বাজারমূল্য হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।

এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে। ব্যাংক-কোম্পানি আইন ১৯৯১ এর ধারা ৪৫ এ পদত্ত ক্ষমতাবলে এই নির্দেশনা জারি করা হলো।

এতে আরও বলা হয়, ব্যাংক-কোম্পানি আইন ১৯৯১ (২০২৮ পর্যন্ত সংশোধিত) এর ধারা ২৬ক এর উপধারা (১) অনুযায়ী কোনো ব্যাংক-কোম্পানি কর্তৃক অন্যান্য কোম্পানির শেয়ার ধারণের ক্ষেত্রে সামষ্টিক বা এককভাবে কোনো কোম্পানির শেয়ার ধারণের সর্বোচ্চ সীমা কনসুলেটেড ভিত্তিতে শেয়ার ধারণের সর্বোচ্চ সীমার বিষয়ে স্পষ্টীকরণ করে ইতোমধ্যে ডিওএস সার্কুলার নং-২/২০১৩ ডিওএস সার্কুলার লেটার নং-০৭/২০১৪ জারি করা হয়েছে। যা বর্তমানে কার্যকর রয়েছে।

সরকারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে যে, উক্ত সার্কুলার লেটারে বর্ণিত কোনো ব্যাংক-কোম্পানি কর্তৃক সলো ও কনসুলেটেড ভিত্তিতে শেয়ার ধারণের ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণের সংশ্লিষ্ট শেয়ার করপোরেট বন্ড, ডিবেঞ্চার, মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং অন্যান্য পুঁজিবাজার নিদর্শনপত্রের বাজারমূল্য হিসাবায়নের পরিবর্তে ক্রয়মূল হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নির্দেশনার ফলে মার্চেন্ট ব্যাংক এবং পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হলো। ২০১০ সালের পর থেকে এই দাবি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জানিয়ে এসেছিল বিএসইসি।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজারমূল্যে বিনিয়োগসীমা গণনা হয় বলে ব্যাংকগুলো দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করতে পারে না। কারণ বাজারমূল্যের ভিত্তিতে বিনিয়োগসীমা গণনা হলে শেয়ারের দাম বেড়ে গেলেই তা বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয় ব্যাংকগুলো। তবে কেনার পর শেয়ারের দাম কমে গেলে হিসাব করা হয় ক্রয়মূল্যে।

এমআই/জেডএস