বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবে কমিশন
রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ ও নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয়ে সময় বেঁধে দেওয়ার খবরে দেশের পুঁজিবাজারে দরপতন হচ্ছে বলে গত কয়েকদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর আসছে। এর মধ্যে নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয় নিয়ে বিনিয়োগকারীদের কাছে ভুল বার্তা দেওয়া হয়েছে। আর যুদ্ধের কারণে দেশের শেয়ারবাজারে সূচক পতন হওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এটা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবে কমিশন।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর দিলকুশায় হোটেল পূর্বাণীতে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) এবং বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটি মার্কেটের (বিএএসএম) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ।
বিজ্ঞাপন
বিএএসএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক আবু আহমেদ, আরিফ খান, মোহাম্মাদ হেলাল উদ্দিন, শাহ মোহাম্মদ আহসান হাবীব ও সিএমজেএফ সভাপতি জিয়াউর রহমান।
তিনি বলেন, গত ২ কার্যদিবসে (বৃহস্পতিবার ও রোববার) শেয়ারবাজারে ডিএসইএক্স কমেছে ২৭২ পয়েন্ট। যুদ্ধের খবর ও নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয়ের বিষয়ে ভুল বার্তা দিয়ে কেউ কেউ ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে।
চলমান যুদ্ধের কারণে সূচক পতন হওয়া যৌক্তিক নয় জানিয়ে তিনি বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ হলেও তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক খুবই কম। তাই আমাদের অর্থনীতিতে এই যুদ্ধের প্রভাব কম পড়বে।
অন্যদিকে নেগেটিভ ইক্যুইটি নিয়ে গণমাধ্যমে যে খবর এসেছে, তা পুরোপুরি ঠিক নয় জানিয়ে সামসুদ্ধিন আহমেদ বলেন, শেয়ারবাজারে নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয়ে ২০১৫ সালে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপরে নিয়মিত তা সমন্বয়ের জন্য সময় বাড়ানো হয়েছে। সম্প্রতি বর্তমান কমিশন সময় বাড়িয়ে তা ২০২৩ সাল পর্যন্ত করেছে। যা শেয়ারবাজারের স্বার্থে প্রয়োজনে আরও বাড়ানো হবে। এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, শেয়ারবাজার ও বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত কমিশন নেবে না। সবার আগে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তাই নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয় নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ দেখার জন্য বর্তমান কমিশন সর্বাত্মক সচেষ্ট রয়েছে। অপ্রয়োজনীয় ও অমূলক তথ্যে বিশ্বাস না করার জন্য বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাংকিং খাতের ভূমিকা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে স্বাধীনতার ৫০ বছরের ব্যবধানে অবস্থানের পরিবর্তন হয়েছে। তার সঙ্গে এই খাত তাল মিলিয়ে চলেছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। এখন মুদ্রাস্ফীতি, সুশাসন ও খেলাপি ঋণে বিশেষভাবে নজর দেওয়া উচিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে শেয়ারবাজার এখন অনেক এগিয়েছে। এক সময় ব্যাংক ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের কথা চিন্তা করা না গেলেও এখন শেয়ারবাজার বিকল্প হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এসআই/জেডএস