কর্মীদের বেতন বেঁধে দেওয়ায় উদ্বিগ্ন ব্যাংক মালিকরা
বেসরকারি ব্যাংকের এন্ট্রি লেভেলে সর্বনিম্ন বেতন বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) নেতারা।
মঙ্গলবার বিএবির ভার্চুয়াল বৈঠকে এ উদ্বেগ জানান ব্যাংক উদ্যোক্তা ও মালিকরা। বৈঠকে অংশ নেন ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) নেতারাও।
বিজ্ঞাপন
বৈঠকে যুক্ত থাকা একটি সূত্র জানায়, বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে দেখা করে বিএবির নেতারা কর্মীদের বেতন বেঁধে দেওয়া নিয়ে তাদের মতামত জানাবেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় গভর্নরের সঙ্গে তাদের দেখা করার কথা রয়েছে।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএবির সভাপতি ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি কর্মীদের এন্ট্রি লেভেলের বেতন নির্ধারণ করে একটি সার্কুলার দিয়েছে। এ বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই আমাদের আলোচনায় আসার কথা। বৈঠকে অংশ নেওয়া সব ব্যাংকের উদ্যোক্তা এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানিয়েছেন। তাদের উদ্বিগ্ন হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে সেসবই আমরা তুলে ধরব।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক এক সার্কুলার জারির মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর এন্ট্রি লেভেলের কর্মীদের বেতন সর্বনিম্ন ২৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেয়। শিক্ষানবিশকাল পার হলে কর্মীদের বেতন নির্ধারণ করে দেওয়া হয় সর্বনিম্ন ৩৯ হাজার টাকা। এ ছাড়া ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অব্যবহিত নিচের পদগুলোতেও আনুপাতিক হারে বেতন বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই সার্কুলারে।
পাশাপাশি ব্যাংকের কর্মচারীদের সর্বনিম্ন বেতন-ভাতা ২৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আমানতের লক্ষ্য পূরণের শর্তে কোনো কর্মীর পদোন্নতি আটকে দেওয়া বা কোনো অভিযোগ ছাড়াই অদক্ষতার কথা বলে কোনো কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা যাবে না বলেও নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে গেলে করোনাকালে বড় ধরনের হোঁচট খাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীরা। তারা এই নির্দেশনা শিথিল চান। তবে এ বিষয়ে তারা প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি। ব্যাংক পরিচালকরাও নির্দেশনায় শিথিলতা চান। তারা মনে করেন, নির্দেশনাটি বাস্তবায়নের জন্য আরও সময় দরকার।
ভার্চুয়াল বৈঠকে আরও অংশ নেন, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দীন আহমদ, এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান তমাল এসএম পারভেজ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছসহ আরও বেশ কয়েকটি ব্যাংকের পরিচালক। ব্যাংক নির্বাহীদের পক্ষ থেকে বৈঠকে এবিবির চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেন ও ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি হুমায়রা আজম অংশ নেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, আগামী ১ মার্চ থেকে কর্মীদের নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করতে হবে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোকে। তবে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই নির্দেশনা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে ব্যাংক সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। এ কারণে সোমবার স্পষ্টিকরণ বিজ্ঞপ্তি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
এসআই/আরএইচ