বড় খেলাপিদের আবদারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘না’
বিশেষ সুবিধায় পুনর্গঠিত বৃহৎ ঋণ আবারও খেলাপি হয়ে পড়েছে। ওই সব বড় ঋণ আবারও পুনঃতফসিল করতে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু তা নাকচ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে পর্ষদ সভায় এ আবেদন নাকচ করা হয়। সভায় পর্ষদ সদস্যসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
বোর্ড সভায়, প্রস্তাবিত পিপলস ব্যাংক লিমিটেডকে দেওয়া লেটার অব ইনটেন্ডের (এলওআই) সময় বাড়ানো, পুনর্গঠিত বৃহৎ ঋণ পুনঃতফসিল, সিআইবি তথ্য গোপন করায় আরোপিত জরিমানা মওকুফ ও গ্রামে ফেরা জনগোষ্ঠীর জন্য ৫০০ কোটি টাকার তহবিলের অনুমোদন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, পুনর্গঠিত বৃহৎ ঋণ পুনঃতফসিলের আবেদনেও সাড়া দেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৫ সালে ব্যাংক খাতে ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ রয়েছে এমন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গ্রুপের ঋণ যৌক্তিক কারণে ১৫ বছরের জন্য পুনর্গঠনের সুযোগ রেখে নীতিমালা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আওতায় প্রকৃত সমস্যায় থাকা উদ্যোক্তার ঋণে নতুন করে সুদহার, ডাউন পেমেন্ট, কিস্তি ও গ্রেস পিরিয়ড নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত আসে। সেই ঋণ পুনঃতফসিলের আবেদন নাকচ করে দিয়েছে ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি। সভায় অগ্রণী ব্যাংকের গ্রাহক তানাকা গ্রুপের সিআইবি তথ্য গোপন করায় আরোপিত জরিমানা মওকুফের আবেদনও বাতিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এলওআইয়ের শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় পিপলস ব্যাংকের আবেদন বাতিল করা হয়েছে জানিয়ে মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রস্তাবিত ব্যাংকটির এলওআইয়ের মেয়াদ ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল। নির্ধারিত সময়ে যেহেতু তারা শর্ত পূরণ করতে পারেনি তাই তাদের সময় বাড়ানোর আবেদন বাতিল করা হয়েছে।
আগের ১২ জন উদ্যোক্তা পরিচালকের মধ্যে এখন শুধু প্রস্তাবিত চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ও তার স্ত্রী আছেন। নতুন করে আরও ২১ জন পরিচালকসহ ২৩ জন আবেদন করেছেন। এর মধ্যে সাকিব আল হাসানও আছেন। তবে এ আবেদনের বিষয়ে পরবর্তী সময়ে কী সিদ্ধান্ত হবে তা এখন বলা যাচ্ছে না।
জানা গেছে, দীর্ঘ তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রস্তাবিত পিপলস ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকিং ব্যবসার জন্য লাইসেন্স নিতে চেষ্টা করছে। তবে এলওআইর শর্ত পূরণ না হওয়ায় এ লাইসেন্স পাচ্ছিল না প্রতিষ্ঠানটি। ফলে কয়েক দফা এলওআইর মেয়াদ বাড়িয়ে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সবশেষ এলওআইর মেয়াদ শেষ হয় গত ৩১ ডিসেম্বর। তবে এর আগেই কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন পূরণের জন্য সাকিব আল হাসান ও তার মা শিরিন আক্তারকে পরিচালক করার বিষয়ে অনাপত্তি চেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আবেদন করে প্রস্তাবিত ব্যাংকটি।
গত ডিসেম্বরে প্রস্তাবিত পিপলস ব্যাংক সাকিব আল হাসান ও তার মা শিরিন আক্তারকে পরিচালক করার জন্য নথিপত্র বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠায়। এ বিষয়ে অনাপত্তির আবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যালোচনায় ছিল। সাকিব ও তার মায়ের বিনিয়োগ করতে হবে ২০ কোটি টাকা। তবে ২৫ কোটি টাকার মতো মূলধন দিচ্ছেন সাকিব।
এসআই/এসকেডি