কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান বলেছেন, আমি পদত্যাগ করিনি, চলমান পরিস্থিতিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী হোম অফিস করছি।

রোববার (১১ আগস্ট) বিকেলে মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে এ কথা বলেন তিনি।

ছাইদুর রহমান বলেন, ওই দিন পরিস্থিতির কারণে আমি সাদা কাগজে সই করেছি। ওইভাবে পদত্যাগ হয় না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি, এখন হোম অফিস করছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা হোম অফিস করব।

পদত্যাগপত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৭ আগস্ট ওই অবস্থায় সই করতে বাধ্য হয়েছিলাম। ওই দিন বাসায় এসে মন্ত্রনালয়কে জানিয়েছি যে, আমি পদত্যাগ করিনি। 

আজ রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব আফসানা বিলকিসের সই করা এক অফিস আদেশে বলা হয়, গভর্নরের অবর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের চার ডেপুটি গভর্নর স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করবেন। এতে আরও বলা হয়, ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার গভর্নরের দৈনিক ডাক (চিঠিপত্র) দেখবেন এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠাবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব আফছানা বিলকিস ঢাকা পোস্টকে বলেন, গভর্নর পদত্যাগ করায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দৈনন্দিন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে ডেপুটি গভর্নররা স্ব-স্ব ক্ষেত্রে তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম চালাবেন।

একজন ডেপুটি গভর্নর পদত্যাগ করেছেন এবং অন্যরা পদত্যাগ করবেন বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপসচিব বলেন, ডেপুটি গভর্নরদের কোনো পদত্যাগপত্র এখন পর্যন্ত পাইনি। তাই তারা স্ব-স্ব পদে দায়িত্ব পালন করবেন। 

তারা অফিস করছেন না কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টা আমি জানি না।  

এর আগে, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে টানা ১৬ বছরের আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটে। এরপর একে একে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতিবাজ ও দলীয় কোটায় নিয়োগ-প্রমোশনপ্রাপ্তদের পদত্যাগের দাবিতে শুরু হয় বিক্ষোভ। বাদ যায়নি ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রক বাংলাদেশ ব্যাংকও। 

বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন ব্যাংকের চার ডেপুটি গভর্নর। তারা হলেন, কাজী সাইদুর রহমান, খুরশীদ আলম, হাবিবুর রহমান ও নুরুন নাহার। এর মধ্যে ৭ আগস্ট কাজী সাইদুর রহমান ক্ষুব্ধ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সাদা কাগজে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন। আর সরকারের পতনের চার দিনের মাথায় পদত্যাগ করেন ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

বিক্ষোভকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংক খাতের ভঙ্গুরতার কারণে দেশে অর্থনীতির আজকের এই খারাপ অবস্থা তৈরি হয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষ কষ্টে আছে। তাই গভর্নরসহ বিভিন্ন অনিয়মে দায়ী কর্মকর্তা যেন দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন, সে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং বিচার করতে হবে। এ ছাড়া, যেসব নির্বাহী পরিচালক অনিয়মে সহায়তা করেছেন, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রাথমিকভাবে তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে হবে।

এসআই/কেএ