ই-কমার্সে শৃঙ্খলা ফেরাতে কমিটি করবে বাংলাদেশ ব্যাংক
ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এসক্রো সার্ভিস নামের যে বিশেষ সেবা চালু করা হয়েছে। সেটি বাস্তবায়নে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এসক্রো বাস্তবায়ন কমিটিতে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই), ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইক্যাব) এবং ই-কমার্স খাতের ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্ত করার কথাও জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (২ অক্টোবর) এফবিসিসিআই ও ইক্যাবের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক সৌজন্য সাক্ষাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের। এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক উপস্থিত ছিলেন।
এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি ও ইক্যাবের সভাপতি শমী কায়সারের নেতৃত্বে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির পরিচালক এবং অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম ‘দারাজ’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাসফিন আলম, ই-ক্যাব পরিচালক মো. ইলমুল হক সজীব ও অনন্য রায়হান।
বৈঠকে এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি ও ইক্যাব সভাপতি শমী কায়সার বলেন, নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশের ই-কমার্স খাত সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। এই খাতে নারীদের অংশগ্রহণ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক মার্কেটে বাণিজ্য সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশের ই-কমার্স খাতকে আরও সমৃদ্ধ করতে পলিসি লেভেলে আমরা কিছু কাজ করতে চাই। এক্ষেত্রে ক্রস বর্ডার ই-কমার্স মডিফিকেশন অত্যন্ত জরুরি।
ই-কমার্স খাতে এখনো কিছু প্রতিবন্ধকতা আছে উল্লেখ করে তিনি জানান, এই প্রতিবন্ধকতা দূর করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে পলিসি সামিট করবে এফবিসিসিআই।
এসময় ক্রেডিট কার্ডের ক্যাপ বাড়াতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানান ইক্যাব সভাপতি। ক্রেডিট কার্ডের ক্যাপ বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা ও প্রয়োজনে পরবর্তী সময়ে বাড়ানো হবে বলে বাংলাদেশে ব্যাংকের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়। এসময় এ সংক্রান্ত কিছু দিক নির্দেশনাও দেওয়া হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে।
সাক্ষাতে বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এসক্রো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরলে এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গ্রাহকদের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে কেনাকাটার উৎসাহিত করতে এবং প্রতারণা এড়াতে ‘মার্চেন্ট অ্যাকোয়ারিং ও এসক্রো সেবা নীতিমালা ২০২৩’ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। এই উদ্যোগকে আরও সংশোধিত ও এর বাস্তবায়নে একটি কমিটি গঠন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেই কমিটিতে এফবিসিসিআই, ইক্যাবসহ ই-কমার্স খাতের ব্যবসায়ী ও অন্যান্য অংশীজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ই-কমার্স খাত এখনো নতুন। সম্ভাবনাময় এই খাতে এখনও অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে। সব বাধা অতিক্রম করে শিগগিরই ই-কমার্স খাতকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
এসক্রো সেবা কী জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, এসক্রো হচ্ছে এমন একটা ব্যবস্থা যাতে লেনদেন এর মাঝখানে একটি তৃতীয় পক্ষ তৈরি করা। এতে অনলাইনে পণ্য ক্রয়ের সময় টাকাটা গেমেন্ট গেটওয়ে এসক্রোতে ধরে রাখে। তারপর ক্রেতা পণ্য পেলে বা সন্তুষ্ট হলে অর্থ ছাড় দেওয়া হয়।
এসআই/কেএ