শীত ও বন্যার দুর্যোগে মানুষের পাশে বেশি দাঁড়িয়েছে ব্যাংকগুলো। তবে কমেছে স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতার ব্যয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এই খাতে অনুদান কমে গেছে। সব মিলিয়ে সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) খাতে ব্যাংকের ব্যয় কমেছে।

২০২০ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংকগুলোর সিএসআর খাতে ব্যয় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ব্যাংকগুলো সিএসআর খাতে ৪৫০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। ২০২০ জানুয়ারি-জুন সময়ে ব্যয় হয়েছিল ৫১৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এ হিসাবে ছয় মাসে সিএসআর ব্যয় কমেছে প্রায় ৬৭ কোটি টাকা।

সিএসআর খাতে মোট ব্যয়ের ৯৬ দশমিক ৬৯ শতাংশই করেছে দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলো। এ খাতে তাদের ব্যয় ৪৩৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর অংশগ্রহণ ১ শতাংশেরও কম, তারা ব্যয় করেছে মাত্র শূন্য দশমিক ৯৫ শতাংশ বা ৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা। আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর ব্যয় ১০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বা মোট ব্যয়ের ২ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আর বিশেষায়িত বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যয় ১৫ হাজার টাকা।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের ষাণ্মাসিকের তুলনায় (জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যাংকগুলো সিএসআর ব্যয় প্রায় দ্বিগুণ বাড়িয়েছে। কারণ, নিজস্ব উদ্যোগে বা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের মাধ্যমে শীতবস্ত্র বিতরণের লক্ষ্যে অনুদান দিয়েছে তারা। পাশাপাশি বন্যা কবলিত মানুষের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ এবং করোনায় আক্রান্ত মানুষের আপদকালীন সেবায় অগ্রাধিকার দিয়ে ব্যাংকগুলো অর্থ সহায়তা করেছে। যার কারণে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ব্যয় বেড়েছে।

জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে ২৬৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা সিএসআর ব্যয় করে ব্যাংকগুলো। যা মোট সিএসআরের ৫৯.৩৬ শতাংশ। আগের ছয় মাসে এ খাতের ব্যয় ছিল ১৩৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।

এদিকে সিএসআর খাতে ব্যয়ের ৬০ শতাংশই স্বাস্থ্য খাতে ব্যবহার করতে হবে এমন নির্দেশনা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় খরচ বেশি হওয়ায় স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় কমেছে। জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ব্যাংকগুলো স্বাস্থ্য খাতে মোট সিএসআরের ১৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ বা ৭৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় করে। যা আগের ছয় মাসে ছিল ৯৬ কোটি ৫ লাখ টাকা।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এই খাতে অনুদান কমে দাঁড়িয়েছে ৪৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, যা ২০২০ সালের জানুয়ারি-জুনে ছিল ৬০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সিএসআর খাতে ব্যয় করেছে ৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।

এসআই/এসএসএইচ