গোপালগঞ্জের আমানত ঢাকার তেজগাঁওয়ে একটি মাল্টিন্যাশনাল প্রতিষ্ঠানের ইনভেন্টরি ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন। দুই সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে থাকেন বনশ্রী এলাকায়। সামনে ঈদ। ঈদের দুদিন আগে স্ত্রী-সন্তানদের জন্য ঈদের জামা কিনেছেন। ঈদের আগেরদিন গোপালগঞ্জ যাবেন পরিবার নিয়ে। 

তবে ঈদের আগেরদিন সকালে হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী স্বর্ণা। ফোনে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বললে চিকিৎসক কয়েকটি টেস্ট করার পরামর্শ দেন। আমানত তেজগাঁওয়ের ইমপালস হাসপাতালে ফোন দিয়ে শোনেন ৮ হাজার টাকার মতো লাগবে টেস্ট করতে। তবে তার কাছে এতো টাকা ছিল না। 

বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলেছেন, ঈদের আগ মুহূর্তে এতো টাকা দেওয়ার মতো কাউকে পাননি। তার অফিসের এক সহকর্মীকেও ফোন দেন তাৎক্ষণিক সহযোগিতার জন্য। তবে সহযোগিতা না পেলেও একজন পরামর্শ দেন বিকাশে লোনের আবেদনের জন্য। 

কোনো উপায় না পেয়ে প্রথমবারের মতো লোন অপশনে চাপ দেন আমানত। ভেরিফিকেশনের পরই তাকে ২০ হাজার টাকা অফার করে বিকাশ। চট করে লোন নিয়েই স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে রওনা দেন আমানত। সেখানে ১৩ হাজার টাকার টেস্ট করে বিকাশে বিল পেমেন্ট করে স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি ফিরে যান। 

আমানত ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্ত্রী অসুস্থ, টেস্ট করাতে হবে পকেটে টাকা নেই। কারও কাছে ধারও পাচ্ছি না। ওই সময় কোনো ধরনের কাগজপত্র ছাড়াই লোন পাওয়া আমার কাছে বড়ো আশীর্বাদ। ওই সময়ের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। ঘরে বসে এমন ঋণের সুযোগ আসলেই সুবিধা করে দিয়েছে। কেনাকাটা থেকে শুরু করে বেশিরভাগ লেনদেন বিকাশে করি। এই ধরনের লোনের সুযোগ লেনদেনে আরো উৎসাহ দেবে —জানান এ বিকাশ গ্রাহক। 

অপর এক গ্রাহক আবু সায়েম ঋণ নেওয়ার গল্পটা ভিন্ন। অফারে মোবাইল কিনবেন কিন্তু যে পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হবে তা বিকাশ অ্যাকাউন্টে নেই। তাৎক্ষণিক বিকাশ অ্যাপে লোন চাপ দিতেই তাকে জানান ১০ হাজার টাকা ঋণ নিতে পারবেন। কিন্তু তার দরকার ৮ হাজার টাকা; সঙ্গে সঙ্গে ঋণ নিয়ে কিনলেন শখের মোবাইল। 

সায়েম জানান, পারফেক্ট টাইমে লোন পেয়েছি। সঠিক সময়ে লোন না পেলে অফার মিস করতাম। জামানত ছাড়া হঠাৎ এই ঋণ পাওয়ায় শখের মোবাইলটি কিনতে পেরেছি; সঙ্গে ৫ হাজার টাকার অফারও পেলাম। পাশাপাশি ব্যাংকের ঋণ নেওয়া যে কাগজপত্রের নানা ঝুঁকি-ঝামেলা ও ভোগান্তির ভয় ছিল বিকাশ-সিটি ব্যাংকের ডিজিটাল ন্যানো লোনে তা দূর হয়ে গেছে। ঘরে বসেই পেলাম সহজ ঋণ। 

বিকাশ অ্যাপ থেকে লোন পরিশোধ করাটা খুবই সহজ। পরিশোধের নির্ধারিত তারিখের আগেই নোটিশ আসে, ফলে নিজেকে মনেও রাখতে হয় না। বিকাশ যে তাৎক্ষণিক জামানতবিহীন লোনের সঙ্গে পরিচয় করাল, তা অনেকের জীবনকেই সহজ করে দিচ্ছে।

ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা সাধারণ মানুষকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে তাৎক্ষণিক ঋণ দিতে এর যাত্রা শুরু হয়। গ্রাহক তাৎক্ষণিকভাবে বিকাশ অ্যাকাউন্টে ৫০০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত সিটি ব্যাংকের জামানতবিহীন ডিজিটাল ন্যানো লোন পেতে পারেন। বার্ষিক ৯% সুদে তিনটি মাসিক কিস্তিতে বিকাশ অ্যাপ থেকেই ঋণ পরিশোধ করার সুযোগও রয়েছে। প্রযুক্তির সহায়তায় দৈনিক হারে সুদ নির্ধারিত হয়। ফলে মেয়াদ পূর্তির আগেও ঋণ পরিশোধ করা যায় এবং সে ক্ষেত্রে শুধু সেই কয়েক দিনের জন্যই সুদ বহন করতে হবে। 

ঋণ নেওয়ার পদ্ধতি : গ্রাহককে তাদের বিকাশ অ্যাপের ‘ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লোন’ আইকনে ট্যাপ করতে হবে। পরবর্তী ধাপে সিটি ব্যাংক অনুমোদিত সীমার মধ্যে কাঙ্ক্ষিত ঋণের পরিমাণ লিখতে হবে এবং শর্তাবলিতে সম্মতি দিতে হবে। এর পর বিকাশ পিন দিলে অবশ্যই ঋণ প্রাপ্তির যোগ্যতা সাপেক্ষে সঙ্গে সঙ্গে বিকাশ অ্যাকাউন্টে ঋণের টাকা পেয়ে যাবেন গ্রাহক। 

এ বিষয়ে বিকাশের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার আলী আহম্মেদ বলেন, “মানুষের আর্থিক লেনদেনকে সিম্পল ও স্মার্ট করতে আমরা নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছি। জামানতবিহীন ডিজিটাল ন্যানো লোন সব পেশাজীবী মানুষের জন্য দারুণ স্বস্তির। ব্যাংকে না গিয়েই ব্যাংকের লোন সব শ্রেণির বিকাশ গ্রাহকের কাছে তাদের ক্রেডিট রেটিং অনুসারে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে ইতোমধ্যেই অনন্য উদাহরণ তৈরি হয়েছে, যা বাংলাদেশে প্রথম। সামনের দিনে আরো বড় পরিসরে বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় ন্যানো লোন দেওয়ার পথ সুগম করতে বিকাশের এই অনন্য উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।” 

এসআই/এসএম