ওয়াসার ঘাটতি মেটাতে পানির দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই
ঢাকা ওয়াসার ঘাটতি মেটাতে পানির দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। বরং সংস্থাটির অপ্রয়োজনীয় ব্যয় সংকোচন করেই ঘাটতি টাকার সমন্বয় করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন ভোক্তাকণ্ঠের সম্পাদক কাজী আব্দুল হান্নান।
মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) আয়োজিত ‘পানির অন্যায্য মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের প্রতিবাদ’ শীর্ষক সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এ তথ্য জানান তিনি।
বিজ্ঞাপন
ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমানের সভাপতিত্বে অনলাইন সভায় উপস্থিত ছিলেন, ক্যাব-এর সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. এম শামসুল আলম, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সৈয়দ মিজানুর রহমান (রাজু), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভূ-তত্ত্ববিদ বদরুল ইমাম।
কাজী আব্দুল হান্নান বলেন, করোনা মহামারির মধ্যে গত দুই বছরে দুই দফায় পানির দাম বাড়ানো হয়েছে। (আবাসিকে প্রতি এক হাজার লিটার পানির দাম বেড়েছিল ৩ টাকা ৬১ পয়সা আর বাণিজ্যিকভাবে বাড়ানো হয় ৪ টাকা ৯৬ পয়সা)। গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির পর এখন জনগণের অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য পানির দাম ২০ শতাংশ বাড়াতে চায় সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ওয়াসা। তারা বলছে, ঘাটতি টাকা তুলতে পানির দাম বাড়ানো হচ্ছে। আমি মনে করি, ঘাটতি মেটাতে সংস্থাটির অপ্রয়োজনীয় ব্যয় সংকোচন করেই সমন্বয় করা সম্ভব। এ জন্য মূল্যবৃদ্ধির প্রয়োজন হয় না।
‘গ্যাস, বিদ্যুতের পর পানির দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ’ শীর্ষক প্রবন্ধে বলা হয়, তেল গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিকে কারণ দেখিয়ে ঢাকা ওয়াসা প্রতি হাজার লিটার পানির উৎপাদন খরচ ২৫ টাকা দেখিয়ে বলছে তারা ১০ টাকা কমে ১৫ টাকায় বিক্রি করছে। সরকার এ টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে। যা আর দিতে চায় না।
এ অবস্থায় সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি অপচয়ের সব দায়ভার ভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে ভর্তুকি কমানোর পথ বেছে নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সরকারের কাছ থেকে ভিক্ষা নিয়ে কোনো সংস্থা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে না। কিন্তু ওয়াসা একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান, লাভ বা বাণিজ্য এর উদ্দেশ্য নয়। অথচ সেবার চেয়ে বাণিজ্যের দিকেই এর নজর এখন বেশি। দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে আরও ৬টি ওয়াসা আছে। তাদের পানির দাম ঢাকা ওয়াসার চেয়ে প্রায় তিনভাগের এক ভাগ।
দেশের জেলা-উপজেলাগুলোতে সরকারি টাকায় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। সেগুলোতে যে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দেওয়া হয় সেটাও কি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে? যদি তা না হয়, তবে ঢাকায় ভর্তুকি বন্ধ করে সরকার কি এক দেশে পানি সরবরাহ বাবদ বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে?
এমআই/এসকেডি