ঢাকায় চার দিনব্যাপী কারুপণ্য মেলা শুরু বুধবার
রাজধানীর গুলশান শুটিং ক্লাবে শুরু হচ্ছে ‘৪র্থ হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল ২০২২’ কারুপণ্য মেলা। চার দিনের এ মেলা শুরু হবে আগামী বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি)। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে।
মেলায় বাংলাদেশের গৌরবময় ঐতিহ্য ও কৃষ্টির অংশ ঐতিহ্যবাহী তাঁতপণ্যের প্রস্তুতকারক ও শীর্ষস্থানীয় ডিজাইনারদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন, বিলুপ্তি ঠেকানো এবং সর্বোপরি দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এসএমই ফাউন্ডেশন এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স বাংলাদেশ (এএফডিবি) চতুর্থবারের মতো এ মেলার আয়োজন করছে।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁও পর্যটন ভবনে এসএমই ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. মো. মফিজুর রহমান। এসময় ফেস্টিভ্যালের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স বাংলাদেশ (এএফডিবি) সভাপতি মানতাশা আহমেদ।
ফেস্টিভ্যালের উদ্দেশ্য
>> বাংলার গৌরবময় ঐতিহ্য ও কৃষ্টির অংশ হিসাবে দৈনন্দিন জীবনে ঐতিহ্যবাহী তাঁত পণ্যের ব্যবহার প্রদর্শন করা।
>> ঐতিহ্যবাহী তাঁত পণ্যের প্রচার, প্রসার এবং বাজারজাতকরণের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
>> তাঁত পণ্য প্রস্তুতকারক এবং শীর্ষস্থানীয় ডিজাইনারদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা।
>> স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে স্থানীয় তাঁত পণ্য প্রস্তুতকারকদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা।
>> বাংলার ঐতিহ্যবাহী পণ্যের বিলুপ্তি রোধ করা।
গুলশান শুটিং ক্লাবে ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সভাপতি ওয়াসিকা আয়েশা খান এবং সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। সভাপতিত্ব করবেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান।
মেলায় বয়নশিল্প প্রদর্শন, লাইভ ফ্যাশন শোর পাশাপাশি প্রায় ৬০টি স্টলে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শন করা হবে শাড়ি-লুঙ্গি-গামছা, খাদি, নকশিকাঁথা, বেনারসি ও সিল্ক শাড়ি, টাঙ্গাইল শাড়ি, জামদানি শাড়ি, শতরঞ্জি, পটচিত্র, রিকশা পেইন্ট, জুয়েলারি, টেরাকোটা, পিতল, কাশা, শঙ্খ, মনিপুরী কাপড়, রাঙামাটির চাকমাসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কাপড় ও হস্তশিল্প পণ্য, পাটজাত, বাঁশ ও বেতলজাত পণ্য। থাকবে খাতভিত্তিক পণ্যের ইতিহাস নিয়ে তথ্যচিত্র প্রদর্শন, পণ্য সম্পর্কে ক্রেতাদের ধারণা দেওয়া, সেমিনারসহ বিভিন্ন আয়োজন। ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ করবেন বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশন, ডিজাইনার, শিল্পী, তাঁতীসহ ঐতিহ্যবাহী পণ্যের উদ্যোক্তারা। এছাড়া ফেস্টিভ্যালে লোকজ শিল্পীদের সঙ্গীত পরিবেশনা, ফ্যাশন শো, দেশি পোশাক বিষয়ে কুইজ ও ফটো কনটেস্ট, সেমিনার, ক্রেতা-বিক্রেতা ম্যাচমেকিং ইভেন্টের আয়োজন থাকবে।
ফেস্টিভ্যালের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং কূটনীতিকদের জন্য ‘ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ ডে’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন ভারত, জাপান ও মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূতরা। বিকেল ৩টায় ‘ঐতিহ্য সংরক্ষণে যুব সমাজের ভূমিকা’ সেমিনারে প্রধান অতিথি থাকবেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। বিশেষ অতিথি থাকবেন শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা।
ফেস্টিভ্যালের তৃতীয় দিন শুক্রবার বেলা ১১টায় ‘ঐতিহ্য সংরক্ষণে প্রযুক্তির ভূমিকা’ সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর।
ফেস্টিভ্যালের শেষ দিন শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি থাকবেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।
ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পৃক্ত করা
হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যালে দেশের ফ্যাশন ডিজাইন বিষয়ক বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চারুকলা ইনস্টিটিউটসহ অন্যান্য স্টেকহোল্ডাদের সম্পৃক্ত করা হবে। এক্ষেত্রে ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন ডিজাইনারদের প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্টের জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তাদের জন্য পৃথক একটি স্টল বরাদ্দের সুপারিশ করা হয়েছে। এই ফেস্টিভ্যালে একটি তথ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হবে, যেখানে প্রদর্শিত পণ্যের প্রস্তুতকারক ও আয়োজক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করা হবে। এছাড়া ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধার ব্যবস্থা রাখা হবে।
এসআই/জেডএস