ই-রিটার্নে যুক্ত হলো টিআইএন সার্টিফিকেট সেবা
টিআইএন সার্টিফিকেটি ডাউনলোড করতে হলে ই-টিআইএন অপশনে গিয়ে পাসওয়ার্ড দিয়ে প্রবেশ করে সার্টিফিকেট পাওয়া যেত। একবার পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে, সেক্ষেত্রে টিআইএন সার্টিফিকেট পাওয়া সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে অফিসে গিয়ে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হয়।
তবে আয়কর বিভাগে চালু হওয়া নতুন সেবায় করদাতা যে কোনো সময় ও দেশে-বিদেশে যে কোনো স্থানে বসে টিআইএন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করতে পারবে। গত সপ্তাহ থেকে ই-রিটার্নে এ সেবা চালু হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ই-রিটার্নে সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে করদাতা আইডি ও পাসওয়ার্ড ভুলে গেলেও তার নিবন্ধিত ফোন নম্বর ব্যবহার করে নতুন পাসওয়ার্ড সেট করে সেবা নিতে পারবেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আয়কর বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনেকে অনুরোধ করছিলেন, টিআইএন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করার সুবিধাও যেন ই-রিটার্নে যোগ করা হয়। এতে আয়করের প্রয়োজনীয় সেবাগুলো এক জায়গা থেকে পাওয়া যাবে। সে কারণে এনবিআর সুবিধাটা চালু হয়েছে। এখন থেকে টিআইএনধারী যে কোনো ব্যক্তি-করদাতা এখন ই-রিটার্ন সিস্টেম থেকে যে কোনো সময় নিজের টিআইএন সার্টিফিকেট ডাউনলোড ও প্রিন্ট নিতে পারবেন।
তিনি বলেন, টিআইএন সার্টিফিকেট জেনারেট হয় ই-টিআইএন সিস্টেম থেকে। কোনো কারণে আইডি-পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে কারদাতা আর ট্যাক্স ফাইলটা দেখতে পারে না।ফলে টিআইএন সার্টিফিকেট সংগ্রহের জন্য অনেককে কর অফিসে যেতে হচ্ছে। তবে ই-রিটার্নে পাসওয়ার্ড ভুলে গেলেও সমস্যা নেই, নিজের নামে নিবন্ধিত ফোন নম্বর থাকলে ঘরে বসেই আবার নতুন পাসওয়ার্ড সেট করা যাবে এবং সার্টিফিকেট ডাউনলোড করতে পারবে।
ই-রিটার্নে যেভাবে নিবন্ধন করা যায়-
ই-রিটার্ন দিতে চাইলে প্রথমে এনবিআর www.etaxnbr.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন নিতে হবে। নিবন্ধন অপশনে গেলে প্রথমে আপনাকে কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) দিতে হবে। এরপর নিজের নামে নিবন্ধিত মোবাইল ফোন নম্বর দিতে হবে আপনাকে। পরে ক্যাপচা লিখে সত্যতা যাচাই করতে হবে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র, টিআইএন নম্বর, মোবাইল ফোনের তথ্য যাচাই করে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) দেওয়া হবে। এই প্রক্রিয়ায় আপনি নিজের জন্য একটি পাসওয়ার্ড দেবেন। এভাবে হয়ে যাবে আপনার ই-রিটার্ন নিবন্ধন।
কীভাবে পেমেন্ট করে ই-রিটার্ন দেবেন-
ই-টিআইএন আছে এমন সবার রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক। সেই করদাতাদের জন্য সুখবর নিয়ে এসেছে ই-রিটার্নের ব্যবস্থা। তবে যাদের করের পরিমাণ বেশি কিংবা অগ্রিম আয়কর দিয়েছেন, তারা আপাতত এ সিস্টেম ব্যবহার করতে পারবেন না। এছাড়া বাকি করদাতারা টিআইএন নম্বর ও পাসওয়ার্ড দিয়ে সিস্টেমে ঢুকে কয়েকটি ক্লিকেই রিটার্ন দিতে পারবেন। সিস্টেম থেকেই জিজ্ঞাসা করা হবে, করযোগ্য আয় আছে কি না। এ ছাড়া বাড়ি-গাড়ি আছে কি না কিংবা ৪০ লাখ টাকার বেশি সম্পদ আছে কি না। এসবের উত্তর যদি ‘না’ হয় তাহলে এনবিআরের ওই সিস্টেমই আপনার রিটার্ন তৈরি করে দেখাবে। আপনি শুধু তা চেক করে সাবমিট করবেন।
যাদের করের পরিমাণ কম ১০-২০ হাজার টাকা; তারা বিকাশে কর দিতে পারবেন। এনবিআরের হিসাবে এমন করদাতার সংখ্যা ১০-১৫ লাখ, তারা অনলাইনে ই-রিটার্ন দেওয়ার সময় বিকাশের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতে পারবেন।
২০২০ সালের নভেম্বর মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ই-রিটার্ন সিস্টেম চালুর উদ্যোগ নেয়। সংস্থাটির একটি দল ১১ মাস ধরে কাজ করার পর গত অক্টোবর মাসে পরীক্ষামূলকভাবে সিস্টেমটি চালু করে। তবে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। তবে প্রতিনিয়ত আপডেট ও নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ চলমান রয়েছে।
আরএম/এসএম