২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৬.৯ শতাংশ : বিশ্ব ব্যাংক
২০২১-২২ অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি নিয়ে আগের দেওয়া পূর্বাভাসই রাখল বিশ্ব ব্যাংক। মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংক যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেখানে ৬.৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কথা বলা হয়ছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবরই বিশ্ব ব্যাংক প্রাক্কলন করেছিল ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৪ শতাংশ। রফতানি বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোয় প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলে জানিয়েছিল বিশ্বব্যাংক।
বিজ্ঞাপন
একইসঙ্গে বিশ্ব ব্যাংক বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার বেড়ে দাঁড়াবে ৬.৯ শতাংশ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছর শেষে ভারতের প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ৮.৩ শতাংশে আর ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা দাঁড়াবে ৮.৭ শতাংশে।
বিশ্ব ব্যাংকের সাম্প্রতিক এই প্রতিবেদনে পাকিস্তানের বিষয়ে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছর শেষে দেশটির প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৩.৪ শতাংশে আর ২০২২-২৩ অর্থবছরে গিয়ে তা দাঁড়াবে ৪ শতাংশে।
বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৪.১ শতাংশে নেমে আসতে পারেও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। করোনা সংক্রমন বাড়তে থাকায় বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ধীরগতির আশঙ্কাও করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
এতে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের দ্রুত বিস্তার থেকে এ ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, মহামারির কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে এবং চীনের মতো বিশাল অর্থনীতিতে মন্দার কারণে উদীয়মান এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতির চাহিদায় বাড়তি চাপ তৈরি হবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বের সব দেশেরই জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। যার ফলশ্রুতিতে অনেক দেশের প্রবৃদ্ধি ধনাত্মক থেকে ঋণাত্মকে পৌঁছে অর্থনৈতিকভাবে হিমশিম খাচ্ছে। চলতি বছর থেকে প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধারের পূর্বাভাস থাকলেও করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনে আবারও হুমকিতে পড়তে যাচ্ছে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি।
বিশ্ব ব্যাংক বলছে, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টে ওমিক্রনে সামনে ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়বে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি। ২০২৩ সালের মধ্যে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি আরও কমবে। উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে ‘হার্ড ল্যান্ডিং’ এর ঝুঁকি বাড়াচ্ছে মুদ্রাস্ফীতি ও ঋণ। এর ফলে বৈষম্যের পাশাপাশি করোনা সংকটে অনিশ্চয়তা তীব্রতর হবে।
বিশ্বব্যাংক জানায়, ২০২১-২২ সালে একটি শক্তিশালী প্রত্যাবর্তনের পরে, বিশ্ব অর্থনীতি একটি সুস্পষ্ট মন্দার মধ্যে প্রবেশ করছে। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের নতুন হুমকি। মুদ্রাস্ফীতি, ঋণ এবং আয় বৈষম্য বৃদ্ধির মধ্যে যা উদীয়মান এবং পুনরুদ্ধারকে বিপন্ন করতে পারে।
করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট এমন একটা সময়ে এল যখন উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলো ঘুরে দাঁড়ানোর নানা পদক্ষেপ নিচ্ছিল। সামনের সময় আরও কঠিন হবে।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস জানান, বিশ্ব অর্থনীতি একই সঙ্গে কোভিড-১৯, মুদ্রাস্ফীতি এবং নীতির অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান বৈষম্য এবং নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।
তিনি বলেন, করোনা সংকট মোকাবেলায় অধিক দেশকে সম্পৃক্ত করতে হবে। বিশ্বকে একটি অনুকূল প্রবৃদ্ধির পথে রাখার জন্য সমন্বিত আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ এবং জাতীয় নীতি প্রতিক্রিয়াগুলো জোরদার করা জরুরি।
এনএফ/এসআর