আটকে থাকা টাকা বছরের শুরু থেকেই ফেরত পাচ্ছেন গ্রাহকরা
নতুন বছরের শুরু (অর্থাৎ জানুয়ারি মাস) থেকেই ইভ্যালি, কিউকম, ধামাকা, ই-অরেঞ্জসহ এক ডজন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কাছে আটকে থাকা অর্থ ফেরত পাচ্ছেন গ্রাহকরা।
পেমেন্ট গেটওয়েতে প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা আটকে আছে। এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের ২১৪ কোটি টাকা ফেরতের উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে মামলার বাইরে থাকা প্রতিষ্ঠানের গেটওয়েতে আটকা টাকা জানুয়ারি থেকে ফেরত পাবেন গ্রাহক। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
সূত্র মতে, গত ১৫ ডিসেম্বর এসক্রো সার্ভিসে আটকে থাকা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর টাকা ফেরত দেওয়া শুরু করতে পেমেন্ট গেটওয়েগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে মামলা থাকায় জটিলতায় পড়তে হয়। তাই এই অর্থ ছাড়ের জন্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে সব মামলার তথ্য সাতদিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে জানাতে পুলিশ সদর দফতরকে গত সপ্তাহে চিঠি দেওয়া হয়।
এসব তথ্য পেলে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে গ্রাহকের টাকা দেওয়া শুরু হবে। সবচেয়ে আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির বিষয়টি হাইকোর্টের গঠিত কমিটি দেখভাল করছে। সাবেক বিচারপতি এইচ এম সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের নেতৃত্বে কাজ করছে কমিটি। ইভ্যালির বিষয়টি কীভাবে নিষ্পত্তি হবে সেটি নিয়ে সেই কমিটি তাদের অবজারভেশন দেবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ডিজিটাল কমার্স সেলকে আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য অনুবিভাগের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এই উইং নিবিড়ভাবে এটি নিয়ে কাজ করছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সাতটি বিষয়ে তাদের কাছে মতামত চেয়েছিল এবং তিনটি মিটিং করে গত ১১ নভেম্বর সেই রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি একটি টেকনিক্যাল কমিটি এটি নিয়ে কাজ করেছে। গত সপ্তাহে এটি নিয়ে একটি বৈঠকও হয়েছে। কীভাবে গ্রাহকের টাকা দেওয়া হবে সেটি নিয়ে কাজ করছে ডিজিটাল কমার্স সেল। ২১৪ কোটি টাকার বাইরে আরও যেসব টাকা আটকে আছে সেগুলো গ্রাহকের কাছে ফিরিয়ে দিতে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুলাই মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, সরবরাহকারী কোম্পানি ও গ্রাহকদের কাছে ৫০০ কোটি টাকার দায়ে পড়েছে ইভ্যালি। প্রতিষ্ঠানটির চলতি সম্পদের পরিমাণ ৬৫ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বরের ১৭ তারিখ প্রতারণার মামলায় গ্রেফতার হন ইভ্যালির সিইও মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন। ইভ্যালির পথ অনুসরণ করে ই-অরেঞ্জ, ধামাকা শপিং, কিউকম, সিরাজগঞ্জ শপ, আনন্দের বাজার, এসপিসি ওয়ার্ল্ড, নিরাপদ ডটকমসহ অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে ও ই-কমার্সকে একটি নিয়মের মধ্যে আনতে উদ্যোগ নেয় সরকার।
এমআই/জেডএস