আয়েশা’স বিউটি পার্লারের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির ২ মামলা
রাজধানীর আয়েশা’স বিউটি পার্লারের দুই শাখার বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির পৃথক মামলা দায়ের করেছে ভ্যাট নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। মামলায় ভ্যাট ফাঁকির পাশাপাশি নিবন্ধন না নিয়ে পার্লার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবসা করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাজধানীর আয়েশা’স বিউটি পার্লারটি নিবন্ধন না নিয়ে বনানীর পার্লারটি ব্যবসা করছে। রাজধানীর ওয়ারী ও বনানীতে আয়েশা’স মেকওভার সেলুন অ্যান্ড স্পার দুটো পার্লারে অভিযান চালিয়ে ১৮ লাখ ৯৮ হাজার টাকার ভ্যাট ফাঁকির অনিয়ম উদঘাটন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দারা। তাদের বিরুদ্ধে দুটো শাখার বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির মামলা দায়ের হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, আয়েশা’স মেকওভার সেলুন অ্যান্ড স্পার শাখা ঢাকার ওয়ারী ও বনানী শাখায় অবস্থিত হলেও নিবন্ধন না নিয়েই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি। একজন গ্রাহকের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। ওই গ্রাহক আয়েশা’স মেকওভার সেলুন অ্যান্ড স্পা থেকে সেবা গ্রহণ করলে তাকে কাঁচা চালানে বিল প্রদান করে। পরে তিনি ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরে অভিযোগ দেন।
ভ্যাট গোয়েন্দার উপ-পরিচালক তানভীর আহমেদের নেতৃত্বে একটি দল প্রতিষ্ঠানটির বনানী পার্লারে এবং সহকারী পরিচালক আলমগীর হুসেনের নেতৃত্বে ওয়ারীর পার্লারে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে প্রাপ্ত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। অভিযানের শুরুতে প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট সংক্রান্ত দলিলাদি উপস্থাপনের জন্য অনুরোধ করা হলে, তিনি ভ্যাট নিবন্ধন নম্বর এবং ভ্যাট সংক্রান্ত কোনো দলিল দেখাতে পারেননি। পরবর্তীতে ভ্যাট গোয়েন্দা কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণে তল্লাশি করে। প্রাপ্ত ভ্যাট ও বাণিজ্যিক দলিলাদির প্রাথমিক যাচাইয়ে গরমিল এবং ভ্যাট পরিহারের আলামতসহ দলিলাদি জব্দ করা হয়েছে।
ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, আয়েশা’স মেকওভার সেলুন অ্যান্ড স্পার ওয়ারী শাখায় ২০২০ সালে জুলাই থেকে ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭৬ লাখ ৮৮ হাজার ৬০০ টাকার সেবা প্রদান করে। তবে প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় সূত্রাপুর ভ্যাট সার্কেলে মাসিক রিটার্নের মাধ্যমে মাত্র ৪৩ হাজার টাকা ভ্যাট প্রদান করে। এক্ষেত্রে সেবা কোড- এস-০৩০.০০ মোতাবেক সমুদয় সেবার বিপরীতে ভ্যাট আইন অনুসারে ১১ লাখ ১০ হাজার ২৯০ টাকা ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে। এই ফাঁকির উপর ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২ শতাংশ হারে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩২ টাকা সুদ প্রযোজ্য।
অপরদিকে, আয়েশা’স মেকওভার সেলুন অ্যান্ড স্পার বনানী শাখায় ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ৩১ লাখ ৪৭ হাজার ৮৪০ টাকার সেবা প্রদান করে। যেখানে সেবার বিপরীতে ভ্যাট আইনে ৪ লাখ ১০ হাজার ৫৮৮ টাকা ভ্যাট ফাঁকি ও ৭৮ হাজার ৫৩৩ টাকা সুদ প্রযোজ্য।
এছাড়া আয়েশা’স মেকওভার সেলুন অ্যান্ড স্পার বনানী শাখায় এক বছরে স্থাপনা ১ লাখ ৩৩ হাজার ৪৩ টাকা ভ্যাট ফাঁকি ও ১২ হাজার ১৯৬ টাকা সুদ প্রযোজ্য রয়েছে। এভাবে সুদ ও ভ্যাট বাবদ মোট ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ৬৮২ টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য পাওয়া গেছে। যে কারণে ভ্যাট আইন দুটি মামলা করা হয়েছে। একইসঙ্গে ওয়ারীর শাখার বিরুদ্ধে আইনানুগ পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য ঢাকা পূর্ব ভ্যাট কমিশনারেট এবং বনানীর শাখার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
আরএম/এসকেডি