বিক্রেতারা বলছেন সবজির দাম কমেছে, ক্রেতাদের ভিন্ন কথা
গত কয়েক মাস ধরেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। দুই একটা ছাড়া অধিকাংশ সবজির দাম ৫০ টাকার উপরে। তবুও বিক্রেতারা বলছেন, সবজির দাম আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। যদিও বিক্রেতাদের এমন দাবি মানতে নারাজ সাধারণ ক্রেতারা।
ক্রেতারা বলছেন, বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম ৫০ টাকার উপরে। গত দুই তিন মাস ধরেই এ দামে বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া শীতকালীন সবজি তো সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে রয়েছে। এ অবস্থায় সবজির দাম কমার বিষয়টি অযৌক্তিক ও ভিত্তিহীন।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ সবজি। তবে কিছু সবজির দাম গত দুই মাসের তুলনায় ১০-২০ টাকা করে কমেছে। কিন্তু এ মৌসুমে যেখানে সবজির দাম ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকার কথা, সেখানে অতিরিক্ত দামে সবজি এখনও বিক্রি হচ্ছে।
কিছুদিন ধরে বাজারে উঠেছে শীতকালীন সবজি ফুলকপি। নতুন ফুলকপি বাজারে উঠায় ক্রেতাদের আকর্ষণ বেশি। তবে দাম বেশি থাকায় তা কিনতে পারছেন না ক্রেতারা। গত সপ্তাহে একটি ছোট আকারের ফুলকপি ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়। যা আজ ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও গত বছর এমন সময় এ আকারের ফুলকপি প্রতি পিস ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হয়।
রাজধানীর রামপুরা বাজারে সবজি কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী শাহজালাল মিয়া বলেন, গত বছর এমন সময় ছোট আকারের একটি ফুলকপি ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু এবার তা কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা। যদিও এই দাম কিছুদিন আগেও ছিল ৬০-৭০ টাকা। একই অবস্থা বাঁধাকপির ক্ষেত্রেও। ২০ টাকা দামের একেকটি বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়।
আরেক ক্রেতা আব্দুস সোবহান বলেন, শীত প্রায় চলে এসেছে। এই সময় এসেও শিমের কেজি ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা। তাহলে আমরা খাব কী? তবুও বিক্রেতারা বলছেন সবজির দাম কমেছে। কমেছে ঠিকই কারণ যে শিম কয়েকদিন আগে বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা কেজি, সেটি আজ ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অতিরিক্ত দাম থেকে কিছুটা দাম কমলে এটা বলা যাবে না যে, সবজির দাম কমেছে। শিম এখন সর্বোচ্চ ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলে বলা যেত শিমের দাম কমেছে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে ছোট আকৃতির ফুলকপি-বাঁধাকপি প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়, গাঁজর প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, টমেটো ১৪০ টাকা, শিম ৮০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৪০ টাকা, ডিম ডজন ১১৫ টাকা, পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৬০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গুলশান সংলগ্ন একটি কাঁচা বাজারের সবজি বিক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, শিম কিছুদিন আগেই বিক্রি করেছি ১২০ টাকা কেজি, কিন্তু আজ ৮০ টাকায় বিক্রি করছি। একইভাবে আগে ছোট আকারের একটি ফুলকপি বিক্রি করেছি ৬০-৭০ টাকায় এখন এটি ৪০ টাকা। কিছুদিন আগেও সব ধরনের সবজি প্রায় ৭০-৮০ টাকার উপরে ছিল। কিন্তু আজ প্রায় সবজি ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। তাহলে তো সবজির দাম আগের তুলনায় কমেছে। তবে গতবছর এই সময় সবজির দাম এত বেশি ছিল না। এ বছরই সবজির দাম হঠাৎ বেড়েছে। শীতের নতুন সব সবজি উঠে গেলে দাম আরও কমবে।
এএসএস/এসকেডি