তেল, চাল-ডালসহ ঊর্ধ্বমুখী নিত্যপণ্যের বাজারে একটু স্বস্তির খবর এসেছে পেঁয়াজে। দুদিনের ব্যবধানে কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম কমেছে ৫ থেকে ১০ টাকা। তবে আরেক দফা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। অস্থিতিশীল রয়েছে সব ধরনের সবজির দাম।

শনিবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর আড়তগুলোতে পেঁয়াজ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়। আর খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা দরে। গত সপ্তাহে এই পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়েছে ৬০-৬৫ টাকা কেজিতে। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে ৮০-৮৫ টাকা কেজিতে।

কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজ ব্যবসায়ী অন্তর ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজকে দেশি পাবনার পেঁয়াজের পাইকারি দর ৫৮ টাকা কেজি। আর হাইব্রিড ফরিদপুরের পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৫৫-৬৫ টাকা কেজি। আর পাবনার পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি করছি ৬০-৬২ টাকা কেজিতে। আর হাইব্রিড পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৫৮ টাকা কেজি। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৬৫-৬৮ টাকা কেজিতে।

একই কথা বলেন লাকসাম বাণিজ্যালয়ের মালিক ঋত্বিক। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, পূজা শেষে হয়েছে, এখন পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। তাই দাম কমতে শুরু করেছে। গত তিন দিনে পেঁয়াজের দাম ২০-২৫ টাকা কমেছে।

শ্যামবাজারে পেঁয়াজ ব্যবসায়ী হাজী মাজেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, দেশী পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি করছি ৫২-৫৪ টাকায়। আর আমদানি পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৫০ টাকা কেজিতে। তিনি বলেন, পূজা শেষ হওয়ার পাশাপাশি পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক কমানো হয়েছে। এ কারণে পেঁয়াজের আমদানি বাড়ছে, দামও কমছে।

এদিকে খুচরা বাজারগুলোতে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা কেজিতে। মালিবাগের ব্যবসায়ী মিশুক আমীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, পেঁয়াজের দাম কমছে। পেঁয়াজ এখন ৬০-৬৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি।

পেঁয়াজ বিক্রিকে লস হচ্ছে জানিয়েছে বাড্ডা কাঁচাবাজারে ব্যবসায়ী মনোয়ার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি গত মঙ্গলবার চার বস্তা পেঁয়াজ কিনেছি। কেনা মূল্য পড়েছে ৬৮-৭০ টাকা। আমি পেঁয়াজ কেনার পরদিন থেকে দাম কমতে শুরু করছে। ৭০ টাকার পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৬৫ টাকা। তাও নিচ্ছেন না ক্রেতারা। লাভের পরিবর্তে কেজিপ্রতি ৫ টাকা লোকসান বিক্রি করছি।

পেঁয়াজের দাম কমলেও হুহু করে বাড়ছে ব্রয়লার দাম। গত বৃহস্পতিবার ১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগির রাজধানীর বাজারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজিতে। অর্থাৎ কেজি প্রতি ১০ টাকা বেড়েছে। কোথাও কোথাও ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৮৫ টাকা কেজিতে। অথচ সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে মুরগির দাম ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি।

ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি বেড়েছে সোনালী মুরগির দামও। সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা কেজিতে। অথচ সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে সোনালী মুরগির কেজি ছিল ২১০ থেকে ২৩০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুরগির খাদ্যের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি ‍হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলো এখন এসব মুরগির চাহিদা বেড়েছে। আর তাতে মুরগির মাংসের দাম বেড়েছে। মুরগির মাংসের দাম বাড়লেও গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গরু মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৬০-৫৮০ টাকা কেজি। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজিতে।

সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁপে ও আলু। এই দুটি সবজি বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা কেজিতে। আর সবচেয়ে বেশি দাম বিক্রি হচ্ছে গাজর ও টমেটো। আমদানি করা এই গাজর ও টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৬০ টাকা ও ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজিতে।

বাজারগুলোতে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে করলা, পটল, চিচিঙ্গা, ঢেঁড়স ও বরবটির। এর মধ্যে করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়সের কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা এবং বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।

এছাড়া কাঁচা কলার হালি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, লাল শাকের আঁটি ১০ থেকে ২০ টাকা, মুলা শাকের আঁটি ১৫ থেকে ২০ টাকা, কলমি শাকের আঁটি ৫ থেকে ১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

শীতকালীন আগাম সবজির মধ্যে শিম হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে। মুলার বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। ঝিঙের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে। ছোট ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। এছাড়াও লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা পিস।

এমআই/ওএফ