জালিয়াতি-আত্মসাতের অর্থ খেলাপি হিসেবে দেখাতে হবে
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জাল-জালিয়াতি, সংঘটিত ডাকাতি ও আত্মসাৎ করা অর্থ এখন থেকে খেলাপি হিসেবে দেখাতে হবে। পাশাপাশি জালিয়াতির অর্থ আদায়ের সম্ভাবনা না থাকলে পুরো অর্থ অর্থাৎ ১০০ ভাগ সংস্থান সংরক্ষণ (প্রভিশন) করতে হবে। তবে আদায়ের সম্ভাবনা থাকলে সংরক্ষণ করতে হবে ৫০ ভাগ।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. জুলকার নায়েনের সই করা এক সার্কুলারে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অসমন্বিত অগ্রিম দফা, অসমন্বিত অগ্রিম আইনি খরচ, তছরূপকৃত অর্থ বা প্রটেস্টেড বিল এবং অন্যান্য ব্যয় বা ক্ষতিবাচক দফা প্রকৃতপক্ষে সম্পদ না হওয়া সত্ত্বেও “অন্যান্য সম্পদ” হিসাবে দেখানো হচ্ছে। তাই আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের বার্ষিক আর্থিক বিবরণীতে ‘অন্যান্য সম্পদ’-এর শ্রেণিকরণ এবং সংস্থান নিশ্চিত করতে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এখন থেকে অগ্রিম প্রদত্ত বেতন-ভাতা, ভ্রমণ ব্যয়, আপ্যায়ন ব্যয়, বিজ্ঞাপন ব্যয়, ব্যবসায় উন্নয়ন ব্যয় ১২ মাস বা তার বেশি সময় অসমন্বিত অবস্থায় থাকলে তা ‘মন্দ ও ক্ষতি’ মানে শ্রেণিকরণ (খেলাপি) করতে হবে। পাশাপাশি এ ধরনের ব্যয়ের বিপরীতে ১০০ শতাংশ অর্থ সংস্থান হিসাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
অসমন্বিত অগ্রিম আইনি খরচ যেকোনো অনিষ্পন্ন আইনি ব্যবস্থায় অনিশ্চয়তা বিদ্যমান থাকায় এ সংশ্লিষ্ট অসমন্বিত আইনি ব্যয় ‘সন্দেহজনক’ মানে শ্রেণিকৃত হবে এবং এসব ব্যয়ের বিপরীতে ৫০ শতাংশ সংস্থান সংরক্ষণ করতে হবে। কোন নিষ্পন্ন আইনি ব্যবস্থার বিপরীতে অসমন্বিত ব্যয় থাকলে সেগুলোকে ‘মন্দ ও ক্ষতি’ মানে শ্রেণিকরণ করে এসব ব্যয়ের বিপরীতে ১০০ শতাংশ সংস্থান সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জাল-জালিয়াতি, সংঘটিত ডাকাতি, অর্থ আত্মসাৎ, তহবিল তছরুপ এমন সব বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে হিসাবায়নের জন্য এ ধরনের খাত বা সম্পদ সৃষ্টি করা হয়। গুণগত মাপকাঠির ভিত্তিতে বিচার-বিশ্লেষ করে প্রোটেস্টেড বিল হতে আদায়ের সম্ভাবনা থাকলে তা ‘সন্দেহজনক’ মানে শ্রেণিকরণ করে এর বিপরীতে ৫০ শতাংশ অর্থ সংস্থান সংরক্ষণ করতে হবে। তবে, প্রোটেস্টেড বিল হতে অর্থ আদায়ের কোন সম্ভাবনা না থাকলে তা ‘মন্দ ও ক্ষতি’ মানে শ্রেণিকরণ করে এর বিপরীতে ১০০ শতাংশ সংস্থান সংরক্ষণ করতে হবে।
‘অন্যান্য সম্পদ’ হিসেবে প্রদর্শিত অন্যান্য ব্যয় বা ক্ষতিবাচক দফাসমূহকে ‘মন্দ ও ক্ষতি’ মানে শ্রেণিকরণ করে এর বিপরীতে ১০০ শতাংশ সংস্থান সংরক্ষণ করতে হবে।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে অর্থাৎ ৩১ মার্চ, ৩০ জুন, ৩০ সেপ্টেম্বর এবং ৩১ ডিসেম্বর ভিত্তি তারিখে ‘অন্যান্য সম্পদ’-এর শ্রেণিকরণ এবং সংস্থান সংরক্ষণ করবে। নির্ধারিত ত্রৈমাসিক শেষে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে সংযুক্ত টেমপ্লেট অনুযায়ী এ সংক্রান্ত বিবরণী বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগে পাঠাতে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের এন্টারপ্রাইজ ডাটা ওয়্যারহাউজ (ইডিডব্লিউ)-এ আপলোড করবে। এসব নির্দেশনা চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ত্রৈমাসিক হিসাবে কার্যকর হবে।
এসআই/আরএইচ