ব্যক্তি শ্রেণির যেসব করদাতার ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (টিআইএন) রয়েছে কিন্তু আয়কর রিটার্ন দাখিল করেননি, তাদেরকে নোটিশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম।

রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আয়কর আইন অনুযায়ী রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু আইনগতভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও আমরা কঠোর হব না। আমরা চড়াও হয়ে করদাতাদের আইনের আওতায় আনতে চাইছি না। আমরা চাই করদাতারা নিজেরা উদ্বুদ্ধ হয়ে আমাদের সহযোগিতা গ্রহণ করুক। আমাদের স্ব স্ব ট্যাক্স জোন থেকেও প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। করদাতাদের নোটিশ করে রিটার্ন দেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।’

ট্যাক্স জিডিপিতে পিছিয়ে থাকলেও তা নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাজস্ব আহরণই আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। সরকারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা কাজ করি। ২০৪১ সালে দেশের অবস্থা কেমন হবে, আর সরকারের পরিকল্পনা সামনে রেখেই আমরা বাজেট করি। ট্যাক্স জিডিপিতে পিছিয়ে থাকলেও তা নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। ট্যাক্স জিডিপিতে আমাদের অবস্থান এখনো ৯ শতাংশের নিচে। অন্যান্য বহু দেশে যা ১২, ১৩, ১৪ শতাংশ পর্যন্ত রয়েছে।’

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা শুল্ক সহযোগিতা না দিলে আমাদের কাঙ্ক্ষিত জিডিপি থাকত ১৭ শতাংশের উপরে। তাই আমরা এটি নিয়ে চিন্তিত বা দুশ্চিন্তা করছি না। যেমন- ভুটান, মালদ্বীপ, নেপালে ট্যাক্স আসে ভ্রমণ থেকে, কিন্তু আমাদের আসে কলকারখানা থেকে। সুতরাং সবদিকে আমাদের বিবেচনা করতে হয়, সহযোগিতা করতে হয়।’

এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান আয়কর বিষয়ে সাফল্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমান অর্থবছরে বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে কর্পোরেট করহার হ্রাস, আইসিটি খাত ও অ্যাগ্রো প্রসেসিং শিল্প বিকাশে অনুকূল নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। অন্যদিকে মেইড ইন বাংলাদেশ শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে নীতি সহায়তা, হালকা শিল্প বিকাশে কর প্রণোদনা ও বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের লক্ষ্যে কর প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।’

কর বিষয়ে বেশকিছু পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে রহমাতুল মুনিম বলেন, অনলাইনে টিআইএন গ্রহণের সঙ্গে এনআইডিসহ সরকারি বিভিন্ন সেবা যুক্ত করা হচ্ছে। আগামীতে এই ধারা অব্যাহত রাখা হবে। অনলাইনে রিটার্ন দেওয়ার ই-ফাইলিং সিস্টেম দ্রুত সমাপ্তির পথে, যা এ বছরই চালু করা হবে। এছাড়া নিরীক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ২০২১-২০২২ অর্থবছরের আয়কর নির্দেশিকা অনুসারে মোট ২২ কারণে আয়কর রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক। আর যদি করদাতা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থ হন তাহলে আয়কর অধ্যাদেশের ১২৪, ৭৩ ও ৭৩এ ধারা অনুযায়ী জরিমানা, ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত সুদ ও বিলম্ব সুদ আরোপযোগ্য হবে।

আরএম/জেডএস