নাসির গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সাড়ে ১৪ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করেছে ভ্যাট নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর বৃহৎ গ্লাস উৎপাদনকারী নাসির গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবসায়িক কার্যক্রম তদন্ত করে প্রায় ১৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেছে। ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় এ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা করা হয়েছে। 

ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, নাসির গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বারিধারা ও গাজীপুরের শ্রীপুরের কারখানায় ভ্যাট গোয়েন্দার সহকারী পরিচালক মো. মাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল অভিযান চালায়। এ সময় ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের দাখিল করা সিএ ফার্ম কর্তৃক প্রদত্ত বার্ষিক অডিট প্রতিবেদন, দাখিলপত্র (মূসক-১৯) ও বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক জমা করা ট্রেজারি চালানের কপিসহ অন্যান্য দলিল পর্যালোচনা করে। এ সময়ে প্রতিষ্ঠানের আত্মপক্ষ সমর্থনে বিভিন্ন তথ্যাদি ও বক্তব্য আমলে নেওয়া হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ২ কোটি ৯ লাখ ৯ হাজার ৮৩৩ টাকা ভ্যাট পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত ভ্যাটের পরিমাণ ৫ কোটি ২৯ লাখ ১২ হাজার ৯৩৮ টাকা। প্রতিষ্ঠানের অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ ৩ কোটি ২০ লাখ ৩ হাজার ১০৫ টাকা ভ্যাট ফাঁকি উৎঘাটন করা হয়। একই সঙ্গে দুই শতাংশ হারে ১ কোটি ৫২ লাখ ২ হাজার ৮৩৪ টাকা সুদ টাকা প্রযোজ্য।

অন্যদিকে, তদন্ত মেয়াদে প্রদেয় ও চলতি হিসাবের পার্থক্য, সোডিয়াম সালফেট অতিরিক্ত ব্যবহারের ওপর রেয়াত কর্তন, প্রাকৃতিক গ্যাস অতিরিক্ত ব্যবহারের ওপর রেয়াত কর্তন, বিজ্ঞাপন অতিরিক্ত ব্যবহারের ওপর রেয়াত কর্তন, মিক্সার গ্যাস অতিরিক্ত ব্যবহারের ওপর রেয়াত কর্তন, উপকরণ মূল্য ৭.৫ শতাংশের অধিক বৃদ্ধি পাওয়ায় রেয়াত কর্তন, নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হওয়ার কারণে রেয়াত কর্তন ইত্যাদি নানা অনিয়ম পাওয়া গেছে। 

ভ্যাট গোয়েন্দা জানায়, আমদানি পণ্য (স্পেয়ার পার্টস) ক্রয় রেজিস্টারে এন্ট্রি না করে খোলা বাজারে বিক্রি করায় রাজস্ব বাবদ প্রতিষ্ঠানটি কোনো ভ্যাট পরিশোধ করেনি। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের অপরিশোধিত মূসক বাবদ ৮ কোটি ১ লাখ ৭৯ হাজার ১৪ টাকা ভ্যাট ফাঁকি উৎঘাটন করা হয়। যেখানে ১ কোটি ৯১ লাখ ৯৯ হাজার ২২০ টাকা সুদ প্রযোজ্য। সব মিলিয়ে ১৪ কোটি ৬৫ লাখ ৮৪ হাজার ১৭৩ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটিত হয়েছে। 
    
তদন্তে উদ্ঘাটিত ভ্যাট আদায়ের আইনানুগ পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণসহ মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা উত্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।

আরএম/ওএফ