ভ্যাট ফাঁকির ৫২ লাখ টাকা দিল আলেশা মার্ট
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্ট থেকে ভ্যাট ফাঁকি বাবদ ৫২ লাখ টাকা আদায় করেছে ভ্যাট নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর।
মঙ্গলবার ( ৩১ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভ্যাট গোয়েন্দা দফতরে অনুষ্ঠিত শুনানিতে আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে উত্থাপিত ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ মেনে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে স্বেচ্ছায় ও স্বপ্রণোদিত হয়ে সরকারি কোষাগারে ভ্যাট ফাঁকির ৫২ লাখ টাকা পরিশোধ করে লিখিতভাবে ভ্যাট গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে আলেশা মার্ট।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, ভ্যাট ফাঁকির সঙ্গে জড়িত থাকায় আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণের জন্য মামলার প্রতিবেদন ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানের সার্বিক কার্যক্রম আরও মনিটরিং করা ও অন্যান্য আর্থিক অনিয়ম আছে কি না তা খতিয়ে দেখার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে।
ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্কে অবস্থিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্টে অভিযান চালিয়ে ৫২ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেন ভ্যাট গোয়েন্দারা। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৮ জুন ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মুনাওয়ার মুরসালীনের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে ভ্যাট গোয়েন্দা দেখতে পায়, প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী অনলাইনে অর্ডার গ্রহণ করে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় করে; কিন্তু তাদের প্রাপ্ত কমিশনের ওপর আরোপিত ভ্যাট যথাযথভাবে জমা প্রদান করে না। অভিযানে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি করে হিসাব বিবরণী জব্দ করা হয়।
অভিযানে প্রাপ্ত দলিলাদি পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত পাঁচ মাসে মোট ১৮১ কোটি ৭৬ লাখ ৬১ হাজার ৮৬৮ টাকার পণ্য বিক্রি করে। এ ক্ষেত্রে কমিশন বাবদ নিয়েছে ৬ কোটি ৪৮ লাখ ৭৪ হাজার ৪৭১ টাকা। যার বিপরীত ৫ শতাংশ হিসাবে প্রযোজ্য ভ্যাট ৩২ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৪ টাকা।অনলাইনে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সরকারি কোষাগারে এ অর্থ জমা প্রদানের বাধ্যবাধকতা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি তা করেননি।
এছাড়াও অনুসন্ধানে লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে উল্লেখিত সময়ে বিভিন্ন কেনাকাটার ওপর উৎসে ভ্যাট বাবদ ১৯ লাখ ৮৫ হাজার ৪৩৬ টাকার ফাঁকি ধরা পড়ে। এভাবে ৫ মাসে কমিশনের ওপর প্রযোজ্য ভ্যাট ও উৎসে ভ্যাট বাবদ মোট ৫২ লাখ ২৯ হাজার ১৬০ টাকার ফাঁকি উদঘাটন করে ভ্যাট গোয়েন্দা।
এর আগে গত ২৬ আগস্ট অনলাইন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জে অভিযান চালিয়ে ১৩ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেছিল ভ্যাট গোয়েন্দা।
আরএম/এসকেডি