ইভ্যালির পেমেন্ট চালু করেছে বিকাশ
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির পেমেন্ট চালু করেছে মোবাইলে আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশ। এছাড়া ইউসিবি ব্যাংকের উপায়, এসএসএল কমার্জ এবং ভিসা মাস্টার কার্ডেও ইভ্যালির পেমেন্ট করা যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ বিভাগ থেকে ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিজ্ঞাপন
এর আগে ১৬ আগস্ট রাতে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল তার ফেসবুকে ওয়ালে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এমনটা জানিয়েছিলেন।
স্ট্যাটাসে মোহাম্মদ রাসেল জানান, এখন থেকে বিকাশ মাধ্যমে ইভ্যালির পেমেন্ট করতে পারবেন গ্রাহক। এছাড়া নগদ, উপায়, ভিসা মাস্টার কার্ড এবং এসএসএল কমার্জের পেমেন্ট চালু আছে। শিগগিরই সবকিছু পুনরুদ্ধার করতে পারব।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিকাশের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক 'ই-কমার্সের পেমেন্ট বিষয়ক যে নীতিমালা দিয়েছে সেই অনুযায়ী বিকাশের পেমেন্ট গেটওয়ে চালু হয়েছে। ১৭ আগস্ট থেকে এটি কার্যকর হয়েছে।
এর আগে ১৭ জুলাই ইভ্যালির পেমেন্ট স্থগিত করে বিকাশ। ওই সময় বেশ কিছু ব্যাংকও ইভ্যালির সঙ্গে তাদের ক্রেডিট, ডেবিট ও প্রি-পেইড কার্ডের লেনদেন স্থগিত করে। এর মধ্যে ডাচ-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (এমটিবি), ব্র্যাক ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক, ইউসিবি ও সিটি ব্যাংক ছিল। এছাড়া ইভ্যালির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ বেশকিছু পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ভাউচারের বিপরীতে পাওনা অর্থ পরিশোধ না করায় তারা বিক্রি বন্ধ করে দেয়। ইভ্যালির গিফট ভাউচারে কেনাকাটার নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞপ্তিও দেয়।
২০১৮ সালে যাত্রা শুরু হওয়া ইভ্যালি একটি বাংলাদেশ ভিত্তিক ই-কমার্স প্লাটফর্ম। লোভনীয় ডিসকাউন্ট কিংবা ক্যাশব্যাকের অফার প্রসঙ্গে ইভ্যালির নাম সর্বাগ্রে। স্বল্প সময়ে অনলাইন ক্রেতার মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করলেও প্রতিষ্ঠানটি এখন গ্রাহক ভোগান্তি ও সমালোচনার শীর্ষে অবস্থান করছে।
ইভ্যালির ‘সম্পদের চেয়ে ছয় গুণ বেশি দেনা’ বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনে উঠে আসে ইভ্যালির মোট দায় ৪০৭ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম নিয়েছে ২১৪ কোটি টাকা, আর মার্চেন্টদের কাছ থেকে বাকিতে পণ্য নিয়েছে ১৯০ কোটি টাকার। স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিষ্ঠানটির কাছে কমপক্ষে ৪০৪ কোটি টাকার চলতি সম্পদ থাকার কথা। কিন্তু সম্পদ আছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকার।
এছাড়া গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছ থেকে গত ১৪ মার্চ পর্যন্ত ইভ্যালির নেওয়া অগ্রিম ৩৩৯ কোটি টাকার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এ টাকা আত্মসাৎ বা অবৈধভাবে অন্যত্র সরিয়ে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে।
সবশেষ গত বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) দেনা-পাওনা ও সম্পদের হিসাব দেওয়ার জন্য তিনটি ধাপে সময় দিয়ে ইভ্যালিকে চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আগামী ১৯ আগস্টের মধ্যে সম্পদ ও দায় বিবরণী, ২৬ আগস্টের মধ্যে মোট গ্রাহক ও গ্রাহকের কাছে দেনার পরিমাণ এবং ২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মার্চেন্টদের কাছে দেনার পরিমাণ জানাতে বলা হয়েছে। এর আগে, ১৯ জুলাই এসব তথ্য জানাতে ইভ্যালিকে চিঠি দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। জবাবে দায়-দেনার তথ্য ও বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে ছয় মাস সময় চেয়ে গত ১ আগস্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠির উত্তর দেয় ইভ্যালি।
গত ৭ জুলাই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালিতে এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে বলে ঘোষণা দেয় দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ যমুনা। প্রাথমিকভাবে ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে, পরে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন পর্যায়ে মোট এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে বলে জানায় গ্রুপটি।
এসআই/এসএম