প্রতীকী ছবি

বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনাভাইরাসের চলমান সংকটের মধ্যেও প্রবাসী আয়ে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। এর ম‌ধ্যে মূল ভূ‌মিকা পালন কর‌ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো।

চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মা‌সে (জুলাই- ডি‌সেম্বর) প্রবাসী বাংলাদেশিরা এক হাজার ২৯৪ কোটি ৪৮ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। এর ম‌ধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের সাত দেশ থে‌কে এসে‌ছে মোট রেমিট্যান্সের ৫৬ শতাংশ বা ৭২৩ কো‌টি ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের নগদ প্রণোদনা ও করোনায় বিদেশ ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণের কারণে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স বেশি এসেছে। এছাড়া বিশ্বব্যাপী মহামারিতে প্রবাসীরা একধরনের অনিশ্চয়তার কারণে জমানো টাকা দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগু‌লো‌র প্রবাসীরা এর ম‌ধ্যে অন্যতম। এসব কার‌ণে রে‌মিট্যান্স প্রবাহ বে‌ড়ে‌ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বল‌ছে, প্রবাসী আয় পাঠানোর শীর্ষে থাকা ১০ দেশের মধ্যে ৫টি হলো মধ্যপ্রাচ্যের।

অর্থবছ‌রের প্রথম ছয় মা‌সে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব থেকে। দেশটিতে অবস্থান করা প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ৩০৬ কো‌টি ৭৩ লাখ ডলার, যা মোট আহরিত রেমিট্যান্সের প্রায় ২৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রেমিট্যান্স পাঠানোয় শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে অন্য দেশগুলো হলো-যুক্তরাষ্ট্র, আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, ওমান, কাতার, ইতালি ও সিঙ্গাপুর।

চল‌তি অর্থবছ‌রের ছয় মা‌সে রেমিট্যান্স আহরণের দ্বিতীয় শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬৫ কো‌টি ডলার।

তৃতীয় মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৭ কোটি ডলার । চতুর্থ অবস্থানে থাকা মালয়েশিয়া থেকে এসেছে ১১৪ কোটি ৬৬ লাখ ডলার। যুক্তরাজ্য থেকে এসেছে ১০২ কোটি ডলার।

রেমিটেন্সের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, সর্বশেষ ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে প্রবাসী বাংলাদেশিরা এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণের রেকর্ড হয়। ওই সময়ে প্রবাসীরা এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিল। তারও আগে অর্থাৎ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল। ওই সময় রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আসে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ১১ লাখ মার্কিন ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ ছিল এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার। যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।

এসআই/জেডএস