করোনায় কাস্টমস পরিবার হারিয়েছে যাদের
মহামারি করোনার ভয়ংকর ছোবলে কমবেশি প্রাণ হারিয়েছেন বেশিরভাগ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। করোনা সংক্রমণে দেশে বিধিনিষেধে কিংবা লকডাউনে ফ্রন্টলাইনার হিসেবে শুরু থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট বিভাগের আট কর্মকর্তা-কর্মচারী জীবন দিয়েছেন। যার মধ্যে একজন কাস্টমস কমিশনার ও পাঁচ জন রাজস্ব কর্মকর্তা রয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া কর্মকর্তারা হলেন-
কমিশনার হোসাইন আহমেদ
কাস্টমস কমিশনার হোসাইন আহমেদ বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড এক্সাইজ) ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা। করোনায় আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরের ১৩ মার্চ বিকেলে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। হোসাইন আহমেদ ১৯৯৫ সালের ১৫ নভেম্বর সহকারী কমিশনার হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। তিনি ১৯৬৭ সালের ১৫ মার্চ রাজবাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন থেকে এমএসএস ডিগ্রিপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন তিনি।
রাজস্ব কর্মকর্তা আনোয়ার জাবেদ
ঢাকা দক্ষিণ কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের রাজস্ব কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন আনোয়ার জাবেদ। ২০২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৯৬৬ সালে জন্ম নেওয়া এ কর্মকর্তা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে করোনায় আক্রান্ত হন। দুই সপ্তাহ লড়াই শেষে মৃত্যুর কাজে পরাজয় বরণ করেন।
রাজস্ব কর্মকর্তা মো. ইদ্রিস আলী মণ্ডল
রাজস্ব কর্মকর্তা মো. ইদ্রিস আলী মণ্ডল রাজশাহী কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটে কর্মকর্তা ছিলেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর মারা যান। ১৯৬৬ সালের জন্ম নেওয়া কাস্টমসের এই কর্মকর্তা বাড়ি জয়পুরহাটে।
রাজস্ব কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম
খোরশেদ আলম রাজস্ব কর্মকর্তা (সুপারিন্টেনডেন্ট) হিসেবে ঢাকা কাস্টম হাউসের রফতানি পরীক্ষা ইউনিটে কর্মরত ছিলেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২০২০ সালের ১৩ জুন সকালে ঢাকার উত্তরায় ইস্ট ওয়েস্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ১৯৬২ সালে জন্ম নেওয়া এই কর্মকর্তার বাড়ি গাজীপুরে।
রাজস্ব কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন মজুমদার
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা (সুপারিন্টেনডেন্ট) জসীম উদ্দিন মজুমদার ২০২০ সালের ৩ জুন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ১৯৬৫ সালের জন্ম নেওয়া এ কর্মকর্তার বাড়ি ফেনীতে। তিনি করোনায় মারা যাওয়া কাস্টমস বিভাগের প্রথম কোনো ব্যক্তি।
রাজস্ব কর্মকর্তা রহমত আলী
রাজস্ব কর্মকর্তা রহমত আলী করোনায় আক্রান্ত হয়ে গতবছরের ৯ আগস্ট সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি রংপুর কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের আওতাধীন বাংলাবান্ধা শুল্ক স্টেশনে কর্মরত ছিলেন। করোনার উপসর্গ নিয়ে রহমত আলী বাংলাবান্ধা শুল্ক স্টেশনে দায়িত্বরত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন। তার বাড়ি কুড়িগ্রামে।
সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা কবির হোসেন সিকদার
সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (কাস্টমস) কবির হোসেন সিকদার ঢাকা কাস্টম হাউসে কর্মরত ছিলেন। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আগে তিনি হার্ট, ফুসফুস ও কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। ২০২০ সালের ১৭ জুলাই রাত ১০টায় রাজধানীর ইমপালস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ১৯৬৪ সালে জন্ম নেওয়া কবির হোসেনের বাড়ি গোপালগঞ্জে।
সুকানী মো. কায়কোবাদ
মোংলা কাস্টমসে সুকানী হিসেবে কর্মরত অবস্থায় ২০২০ সালের ৪ জুলাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন মো. কায়কোবাদ। ১৯৬৩ সালে ফরিদপুরে জন্ম নেওয়া কাস্টমসের এই কর্মচারী করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
আরএম/এসএসএইচ