ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব, নেটফ্লিক্স ও মাইক্রোসফটের মতো আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সংস্থাগুলো এখন থেকে সরাসরি ভ্যাট নিবন্ধন, ভ্যাট রিটার্ন জমা ও ভ্যাট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। ইতোমধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভ্যাট আইনে সংস্থাগুলোর জন্য এই সুবিধা রেখে বিধি সংশোধন করেছে এবং ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের (ভিওপি) আওতায় অনলাইনেও ভ্যাট দেওয়ার সুযোগ রেখেছে।

তবে বাংলাদেশে স্থায়ী কোনো অফিস না থাকায় আরও কিছু জটিলতা রয়েছে, যা আসন্ন ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে স্থায়ীভাবে সমাধান করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বর্তমানে প্রযোজ্য ভ্যাট দেওয়ার ক্ষেত্রে ভ্যাট এজেন্ট নিয়োগের বাধ্যতামূলকের বিধানটি আপাতত থাকছে।

বিদেশি সংস্থাগুলোর পক্ষে ভ্যাট এজেন্ট তাদের প্রতিনিধি হিসেবে অন্যান্য দায়িত্বও পালন করবেন। বর্তমানে ভ্যাট আইন অনুসারে, ভ্যাট পরিশোধের ক্ষেত্রে স্থানীয় ভ্যাট এজেন্টরা দায়বদ্ধ।

এ বিষয়ে ভ্যাট অনলাইন প্রজেক্টের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভ্যাট অনলাইন প্রজেক্টের আওতায় ইতোমধ্যে অনাবাসী বিদেশি সংস্থাগুলোকে সরাসরি সেবা পাওয়ার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন থেকে সংস্থাগুলো ভ্যাট নিবন্ধন, ভ্যাট রিটার্ন জমা দেওয়া এবং ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশের বাইরে থেকেও ভ্যাট পরিশোধ করতে সক্ষম হবে।

তিনি বলেন, এনবিআর বিদেশি সংস্থাগুলোর জন্য ইতোমধ্যে ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন ফর্মটি সংশোধন করেছে এবং এটি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর বাইরে আরও যত জটিলতা রয়েছে তা আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের পর আর থাকবে না বলে আশা করছি।

ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন পেতে এবং ভ্যাট রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য সংস্থাগুলো ২০১৯ সাল থেকে নানা ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। তাই ভ্যাট আইন অনুসারে সরাসরি এই সেবা পাওয়ার বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে দাবি ছিল। কিন্তু কিছু আইনি জটিলতার কারণে বিদেশি সংস্থাগুলোকে ভ্যাটের সেবা পেতে ভ্যাট এজেন্ট নিয়োগ করতে হয়েছিল।

এ বিষয়ে সংস্থাগুলো এনবিআরকে বেশ কয়েকটি চিঠিও দিয়েছিল। যেখানে তারা ভ্যাট দেওয়ার বিষয়ে সরাসরি সেবা নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। যদিও তাদের বাংলাদেশে কোনো স্থায়ী অফিস নেই। যে কারণে বিষয়টি এতদিন ঝুলে ছিল।

এর আগে ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব ও মাইক্রোসফটের মতো আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সংস্থাগুলো ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না- এমন সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এসব কোম্পানিকে হয় বাংলাদেশে অফিস স্থাপন করতে হবে অথবা ভ্যাট এজেন্ট নিয়োগ দিতে হবে। এই এজেন্টরা ব্যবসা পরিচালনা বাবদ বাংলাদেশ সরকারকে রাজস্ব দেবে।

‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২’ আইন অনুযায়ী ফেসবুক, ইউটিউব, গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানকে মূসক নিবন্ধন নিতে হবে এবং তাদেরকে বাংলাদেশে অফিস স্থাপন অথবা মূসক এজেন্ট নিয়োগ দিতে হবে। পরবর্তীতে ২০২০ সালের প্রথম দিকে আলাদা ভ্যাট নিবন্ধন নম্বরের আওতায় আনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় এনবিআর।

আরএম/এসএসএইচ