প্রায় ১০ কোটি টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন মামলার আসামি সেই কাস্টমস কমিশনার এনামুলকে অবসরে পাঠানো হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. হুমায়ুন কবীর স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা যায়, মোহাম্মদ এনামুল হক কমিশনার অব কাস্টমস, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত এর চাকরিকাল ২৫ (পঁচিশ) বছর পূর্ণ হওয়ায় সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা-৪৫ এবং ধারা-৫১ অনুযায়ী জনস্বার্থে তাকে চাকরি হতে অবসর প্রদান করা হলো। তিনি ভবিষ্য তহবিলে প্রদত্ত তার চাঁদা এবং এর সুদ ব্যতীত অন্য কোনো অবসর সুবিধা প্রাপ্য হবেন না। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

২০২৩ সালের ৩১ জুলাই ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে ৯ কোটি ৭৬ লাখ ৯৭ হাজার টাকা মূল্যের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। এর আগে গত সপ্তাহে এনামুলকে সিলেট ভ্যাট কমিশনারেট থেকে সরিয়ে দেয় সরকার। 

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ জুলাই এনামুলের ঢাকা ও গাজীপুরে থাকা বিপুল পরিমাণ সম্পদ জব্দ করেছে আদালত। এর মধ্যে ঢাকার বসুন্ধরায় একটি নয়তলা বাড়ি ও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তিনটি ফ্ল্যাট এবং একাধিক বাণিজ্যিক স্পেস জব্দ করা হয়। এর বাইরে গাজীপুর, গুলশান ও বাড্ডা এলাকায় এনামুলের ৪৭ শতাংশ জমি জব্দ করা হয়। জব্দ করা সম্পদের বাইরেও তার গ্রামের বাড়ি ফেনীর সোনাগাজীতে একাধিক বাড়ি, মাছ ও গরুর খামারের খোঁজ মেলার কথা জানায় দুদক।

ক্রোক করা সম্পত্তির বর্ণনায় বলা হয়েছে, গুলশানের জোয়ার সাহারায় ৬১ হাজার টাকার (দলিল মূল্য) তিন কাঠা জমি, খিলক্ষেতে ৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকার ৩৩ শতাংশ জমি, কাকরাইলের আইরিশ নূরজাহান টাওয়ারে কমন স্পেসসহ ১১৭০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, যার মূল্য ২৮ লাখ ৩০ হাজার ৫০০ টাকা, একই ভবনে কারপার্কিং স্পেসসহ ১৮৩৫ বর্গফুটের ফ্ল্যাট যার মূল্য ৫১ লাখ ২৯০০ হাজার টাকা। এছাড়া কাকরাইলে ১৯০০ বর্গফুট ও ৩৮০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটসহ কারপার্কিং, যার মূল্য ২ কোটি ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা, গাজীপুরে ৬২ লাখ ৪০ হাজার টাকার পাঁচ কাঠা জমি, মোহাম্মদপুরে তিনটি বাণিজ্যিক ভবনে চার হাজার বর্গফুটের তিনটি স্পেস, যার প্রতিটির মূল্য ৭১ লাখ ৩৫ হাজার করে। 

এছাড়া মোহাম্মদপুরে ১০ হাজার ৯৬৫ বর্গফুটের স্পেস রয়েছে, যার মূল্য দুই কোটি ৩৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। গুলশানে আছে ৭২ লাখ টাকার ২৪২৮ বর্গফুটের ফ্ল্যাট এবং বাড্ডায় চার কাঠা নাল জমি যার মূল্য ১৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।

আরএম/জেডএস