সাম্প্রতিক বন্যায় দেশের ১১টি জেলাসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যে কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে আলু ও পেঁয়াজের ওপর বিদ্যমান শুল্ক-কর কমানো হয়। ওই সময় ডিমের ওপর প্রযোজ্য শুল্ক প্রত্যাহারেরও সুপারিশ করা হয়েছিল। ডিম আমদানিতে বর্তমানে ৩৩ শতাংশ শুল্ক-কর দিতে হয়। অন্যদিকে সাম্প্রতিক বন্যার কারণে পোল্ট্রি শিল্পের ক্ষতি হওয়ায় ডিমের দাম ডজন প্রতি বেড়ে ১৮০-১৮৫ টাকা হয়েছে। ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে তাই আবারো শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে ট্যারিফ কমিশন।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যনীতি বিভাগ থেকে দেওয়া এক চিঠিতে এনবিআরকে আবারো অনুরোধ করা হয়েছে। এনবিআরের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ২৯ আগস্ট ২০২৪ তারিখ বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন থেকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পেঁয়াজ, আলু ও ডিম আমদানিতে শুল্ক-করাদি হ্রাসকরণ বিষয়ে একটি বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন এনবিআরে পাঠানো হয়। সুপারিশ অনুযায়ী ৪ সেপ্টেম্বর এনবিআর থেকে আলু ও পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে। এতে স্থানীয় বাজারে এ দুটো পণ্যের মূল্যে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে বলে দেখা গেছে।

অন্যদিকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ডিম আমদানিতে কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী শুল্ক ছাড়ের বিষয়ে এখনো কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। সম্প্রতি স্থানীয় বাজারে ডিমের পর্যাপ্ত সরবরাহে ঘাটতিজনিত কারণে এর দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। টিসিবির হিসাব অনুযায়ী গত এক মাসে ডিমের স্থানীয় মূল্য ১৫ শতাংশ এবং ১ বছরে ২০.৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন জেলায় সাম্প্রতিক বন্যার কারণে পোল্ট্রি শিল্পের ক্ষতি হওয়ায় এবং পরিপূরক অন্যান্য খাদ্য পণ্যের দাম স্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারে ডিমের সরবরাহ ব্যবস্থায় এক ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে।

এই অবস্থায় স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য দেশের পোল্ট্রির শিল্পের সুরক্ষা বিবেচনায় সুনির্দিষ্ট মেয়াদে শুল্ক ছাড়ের মাধ্যমে ডিম আমদানির অনুমতি প্রদান করা হলে পোল্ট্রি শিল্পের ওপর নেতিবাচক প্রভাবের সম্ভাবনা কম। ডিম শর্তসাপেক্ষে আমদানিযোগ্য পণ্য হওয়ায় সরকারে অনুমতি ব্যতিরেকে ডিম আমদানি করা যায় না।

গত বছরগুলোতে ডিম আমদানি না হওয়ার কারণে স্বল্প মেয়াদে এই শুল্ক-করাদি ছাড়ের ফলে সরকারের রাজস্ব ক্ষতিরও আশঙ্কা নেই। বর্তমান ডিম আমদানিতে ৩৩ শতাংশ শুল্ক-কর অব্যাহত রয়েছে। কমিশন মনে করে আমদানি পর্যায়ে ডিমের উপর শুদ্ধ-করাদি স্বল্প সময়ের জন্যে প্রত্যাহার করা হলে সাধারণ জনগণ এই সময়ে স্বস্তির জায়গা খুঁজে পাবে। এই অবস্থায় স্থানীয় বাজারে উচ্চ মূল্যের প্রবণতা রোধে এবং বৃহৎ জনস্বার্থে উপর্যুক্ত সূত্রে প্রেরিত প্রতিবেদন অনুযায়ী অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য হিসেবে স্বীকৃত ডিমের উপর সুনির্দিষ্ট মেয়াদে শুল্ক-কর প্রত্যাহার করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুনরায় অনুরোধ করেছে।

আরএম/জেডএস