সরকারের নিরাপত্তার নিশ্চিত করার আশ্বাসে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দেশের সব তৈরি পোশাক কারখানা খোলা থাকবে। তবে কোনো কারখানায় অস্থিরতা তৈরি হলে পরের দিন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। যেসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে সেখানে কাজ নেই, বেতন নেই; এই আইন অনুসরণ করা হবে।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনে তৈরি পোশাক কারখানায় চলমান সংকট ও উত্তরণের পথ নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় বিষয়টি জানানো হয়।

মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বিজিএমইএ। এতে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য এ কে আজাদ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম।

অন্তর্বর্তী সরকারের শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, রোববার দেশের সব তৈরি পোশাকশিল্প কারখানা খোলা থাকবে। কোনো কারখানায় অস্থিরতা তৈরি হলে বিশেষ ব্যবস্থা নেবে সরকার। দেশের অর্থনীতিকে বিপদে ফেলতে কেউ যদি কারখানা বন্ধ রাখার অপচেষ্টা করেন, সেটা মনে রাখা হবে।

তিনি বলেন, তৈরি পোশাক খাতে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে সরকার কমিটি করেছে। এই কমিটির মাধ্যমে সবার সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করার যে সংস্কৃতি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, তা ফিরিয়ে আনতে হবে।

বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, সরকার নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ায় আগামীকাল সব পোশাক কারখানা খোলা থাকবে। তবে কোনো কারখানায় অস্থিরতা তৈরি হলে আগামী পরশু দিন থেকে সেই কারখানা শ্রম আইনের ১৩/১ ধারা (কাজ নেই, বেতন নেই) অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। পোশাক খাতের অন্যান্য সংগঠনগুলোর নেতারা এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে সায় দিয়েছেন।

শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হওয়ায় অনেকের মতো শ্রমিকেরাও নিজেদের কথা বলছেন। শ্রমিকদের অভিযোগ সমাধানে শ্রমসংক্রান্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সব অভিযোগ ও দাবি নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। তবে শ্রমিকের আন্দোলনে একদমই যে ষড়যন্ত্র নেই, এমনও নয়।

শ্রম উপদেষ্টা আরও বলেন, ইতিমধ্যে শ্রমিকদের জন্য কোন প্রক্রিয়ায় রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা যায়, সে বিষয়ে কাজ শুরু করেছে সরকার। এছাড়া গত বছরের শেষ দিকে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনের সময় যেসব মামলা হয়েছে, সেগুলো প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শ্রম আইনের মধ্য থেকে ট্রেড ইউনিয়ন করার যতটা সুযোগ আছে, তা নিশ্চিত করবে সরকার। তবে এই সব প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে যারা অস্থিরতা করবে, তাদের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে না।

এসআই/জেডএস