চলে গেলো স্বাদে ভরা লিচুর মৌসুম। মে মাসের মাঝামাঝি থেকে বাজারে উঠেছিল লিচু। সেসময় বারোয়ারি জাতের লিচু দিয়ে বাজার শুরু হলেও পরে মাদ্রাজি, বোম্বাই লিচুর পরেই বাজারে আসে চায়না থ্রি, বেদেনা জাতের লিচু। মে মাসের মাঝামাঝি থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলে লিচুর ভরা মৌসুম। বাজারে এখন দু-একটি দোকানে পাওয়া যাচ্ছে মৌসুমের শেষ লিচু। এই লিচুর নাম কাঁঠালি লিচু। মৌসুমের শেষে এসে চড়ামূল্যে বিক্রি হচ্ছে লিচুগুলো। যার প্রতি ১০০ পিসের দাম পড়ছে ১০০০ টাকা। তবে অল্প কিছু ভালো জাতের লিচু আরও চড়ামূল্যে ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সোমবার (১ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে গুটিকয়েক দোকানে মৌসুমের শেষ লিচুগুলো বিক্রি হচ্ছে। অতিরিক্ত দাম হওয়ার কারণে যেমন ক্রেতা কম তেমনি বিক্রি কম হওয়ায় চড়ামূল্যের লিচু রাখেনি বেশিরভাগ বিক্রেতারা। 

রাজধানীর গুলশান এলাকার ফল বিক্রেতা ইব্রাহিম খলিল বলেন, শেষসময়ের লিচু বাজারে খুব কম দোকানেই পাওয়া যাচ্ছে। এর কারণ হলো অতিরিক্ত দাম। ক্রেতারাও খুব একটা কিনছে না বেশি দামের কারণে। ফলে বেশিরভাগ দোকানেই এখন লিচু নেই। আমার দোকানে শুধু কাঁঠালি জাতের লিচু অল্প পরিমাণে আছে। যার প্রতি ১০০ পিসের মূল্য ১০০০ টাকা। গেল কিছুদিন আগেও চায়না গ্রেট লিচু পাওয়া গেছে, তার প্রতি ১০০ পিসের মূল্য ছিল ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকা।

তিনি আরও বলেন, এখন বাজারে লিচু নেই বললেই চলে। ফলের দোকানগুলোতে এখন সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে আম। অন্যান্য ফলের বিক্রি বেশি হলেও লিচুর বিক্রি একেবারে নেই বললেই চলে। গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে লিচু পাওয়া গেছে রাজধানীতে, পরে জুন মাসের শেষ দিক পর্যন্ত বাজারে ছিল লিচু। এখন আর কেমন লিচু নেই, বেশি দামে কিনে বেশি দামেই লিচু বিক্রি করছে অল্প কিছু দোকানি। তবে শেষ সময়ে লিচুর ক্রেতা নেই বললেই চলে। ক্রেতারা দুই একজন শখ করে লিচু কিনছে।

রাজধানীর মহাখালীর একটি ফলের দোকান থেকে ১০০০ টাকায় ১০০ পিস লিচু কিনেছেন নিকেতনের বাসিন্দা আফজাল হোসেন। তিনি বলেন, বাজারে ফলের দোকানগুলোতে লিচু নেই বললেই চলে। আর যে দু-একটি দোকানে লিচু পাওয়া যাচ্ছে সেখানে অতিরিক্ত দাম। আমার ছোটবোন বিদেশ থেকে বাড়িতে আসায় তার জন্য ৫০ পিস লিচু কিনেছি। কারণ সে এই মৌসুমে লিচু খেতে পারেনি। সে কারণে অতিরিক্ত দামে বাধ্য হয়ে লিচু কিনলাম। কয়েকদিন আগে চায়না থ্রি গ্রেট ভালো জাতের লিচু ১২০০ টাকায় কিনেছিলাম। এরপর থেকে আর বাজারে লিচু পাওয়া যাচ্ছে না। যেটি কিনলাম সেটি কাঁঠালি জাতের লিচু। খুব একটা টেস্টি না। 

রামপুরা এলাকার ফলের দোকানদার বিদ্যুৎ কুমার সাহা বলেন, আমার দোকানে এখন আমের পাশাপাশি অন্য ফলগুলো পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু লিচুর অতিরিক্ত দাম হওয়ার কারণে শেষ সময়ের লিচু আর দোকানে তুলিনি। বলতে গেলে গত মাসের শেষের দিকেই লিচুর মৌসুম শেষ হয়ে গেছে। এখন অল্প পরিমাণে যে লিচুগুলো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো খুব ভালো জাতের লিচু নয়। এছাড়া এ লিচুগুলোরই অনেক বেশি দাম পড়ে যাচ্ছে। আর ক্রেতাদের চাহিদাও এখন কম, সে কারণে আমার দোকানে লিচু আর রাখিনি। বেশিরভাগ দোকানেই এখন লিচু নেই। যে দুই একটি দোকানে লিচু পাওয়া যাচ্ছে সেখানে লিচুর দাম অনেক বেশি।

এএসএস/পিএইচ