নিট পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতির মোহাম্মদ হাতেম বলেছেন, দেশের রপ্তানির বড় খাত তৈরি পোশাক শিল্প এখন আইসিইউতে। সঠিক চিকিৎসা না পেলে একে লাইফ সাপোর্টে দিতে হবে। এই মুহূর্তে রপ্তানি প্রণোদনা কমানো মানে এ খাতকে গলাটিপে হত্যা করার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। 

রোববার (৩০ জুন) রাতে রপ্তানি সহায়তা কমানোর বিষয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা পোস্টকে তিনি এসব কথা বলেন। 

নতুন অর্থবছরে রপ্তানির বিপরীতে ভর্তুকি বা নগদ সহায়তা দেওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে সরকার। ৪৩ খাতের পণ্যে নগদ প্রণোদনার পণ্য ভেদে ভর্তুকি কমেছে প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। আজ বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়েছে। 

সার্কুলারের নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছর অর্থাৎ ১ জুলাই থেকে আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে ৪৩টি পণ্য রপ্তানির বিপরীতে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা পা‌বে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সহায়তা পেয়েছিল ৪৩টি পণ্য। নতুন অর্থবছরে নির্ধারিত পণ্যে সর্বনিম্ন দশমিক ৩০ শতাংশ থেকে স‌র্বোচ্চ ১০ শতাংশ হারে এ নগদ সহায়তা পাবেন রপ্তানিকারকরা। যা ২০২৩-২৪ ছিল ১ শতাংশ থেকে স‌র্বোচ্চ ২০ শতাংশ।  

এ বিষয়ে মোহাম্মদ হাতেম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমানে রপ্তানি খাত নানা সমস্যায় জর্জরিত। আর এখন নগদ সহায়তা কমিয়ে দেওয়াটা যুক্তি সঙ্গত নয়। নগদ সহায়তা কমিয়ে দেওয়ার ফলে আমদানি নির্ভরতা বেড়ে যাবে, রিজার্ভ কমে যাবে। আস্তে আস্তে পরনির্ভরশীল হয়ে যাব।

তিনি বলেন, আমাদের একদিকে কর্মীদের বেতন, বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং ব্যাংক সুদ বেড়েছে, অন্যদিকে সহায়তা কমানো হচ্ছে। তাতে ধীরে ধীরে রুগ্ন শিল্পে পরিণত হবে এ খাত। তাতে ঋণের অর্থ ব্যাংক ফেরত পাওয়া যাবে না। এভাবে রপ্তানিকারকদের হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ নষ্ট হয়ে যাবে।

এলডিসির (স্বল্পোন্নত দেশ) অযুহাত ঠিক নয় জানিয়ে পোশাক কারখানার মালিকদের এই নেতা বলেন, উন্নয়নশীল দেশে গেলে আমাদের সুবিধা কমে যাবে, এই অযুহাত দিয়ে নগদ সহায়তা কমানোর কোনো যুক্তি নেই। কারণ আরও দুই বছর সময় আছে। এছাড়া, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর আরও তিন বছর শুল্কমুক্ত রপ্তানির সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং এখনই সব বন্ধ করে দেওয়ার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।

তিনি বলেন, আমরা সরকারের সব মহলে বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু তারা আমলে না সহায়তা কমিয়ে দিয়েছে। তৈরি পোশাক খাত আইসিইউতে আছে, সঠিক চিকিৎসা না পেলে লাইফ সাপোর্টে দিতে হবে।

এসআই/কেএ