রাজস্ব আদায়ে ১১ মাসে (জুলাই-মে) পর্যন্ত বড় ধরনের ঘাটতির মুখোমুখি রাজস্ব আদায়ের একমাত্র প্রতিষ্ঠান জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

চলতি অর্থবছরের জুলাই-মে মাসে এনবিআর সংগ্রহ করেছে ৩ লাখ ২৪ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এক হাজার ৩৬২ কোটি টাকা কম। প্রবৃদ্ধি ১৪.৮৬ শতাংশ হলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

কারণ সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা পেতে রাজস্ব কর্তৃপক্ষকে শুধু জুন মাসেই ৮৫ হাজার ৬২২ কোটি টাকা আয় করতে হবে। যা অসম্ভব বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয় এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকার গত অর্থবছর থেকেই আমদানিকে নিরুৎসাহিত করেছে। এলসি খোলার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি রয়েছে। সামগ্রিক রাজস্ব সংগ্রহের প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ১৫ শতাংশ। আশার কথা হচ্ছে আয়কর থেকে রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব আদায় হয়েছে ১১ মাস শেষে আয়কর বিভাগ থেকে লক্ষ্যমাত্রা তুলনায় বেশি কর এসেছে, এটা কম অর্জন নয়। আশা করছি জুন মাসে রেকর্ড রাজস্ব আদায় করে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে।

এনবিআর সূত্র বলছে, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের ১১ মাসে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় পিছিয়ে আছে ১ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ২৫ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। ওই সময়ে লক্ষ্যমাত্রার ৯৯.৫৮ শতাংশ অর্জন করেছে এনবিআর। প্রবৃদ্ধি ১৪.৮৬ শতাংশ। 

এনবিআরের পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের ১১ মাসে আয়কর ও ভ্রমণ কর আদায় হয়েছে এক লাখ ৫ হাজার ৫৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা, লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯২ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আদায় হয়েছে ১২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৮.০৯ শতাংশ বেশি। এ খাতে রেকর্ড রাজস্ব আদায়ে হয়েছে। 

অন্যদিকে স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আদায় হয়েছে এক লাখ ২৭ হাজার ৭৬৩ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ৩২ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম মূসক আদায় হয়েছে ৪ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি ১৬.৩৫ শতাংশ। 

আর আমদানি ও রপ্তানি পর্যায়ে শুল্ক আদায় হয়েছে ৯১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা কম। লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ৩৫৫ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯.৪৬ শতাংশ। 

প্রসঙ্গত, প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব  আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে। যা জিডিপির ৯.৭ শতাংশ।এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের  মাধ্যমে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। আর অন্যান্য উৎস হতে ৬১ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে আয়কর, মুনাফা ও মূলধনের ওপর কর থেকে আসবে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬২০ কোটি টাকা, ভ্যাট থেকে ১ লাখ ৮২ হাজার ৭৮৩ কোটি, সম্পূরক শুল্ক ৬৪ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা, ৪৯ হাজার ৪৬৪ কোটি, রপ্তানি শুল্ক ৭০ কোটি, ৫ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা ও অন্যান্য কর থেকে আসবে ১ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা।

আরএম/এমএ