চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) সার্বিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাজ্য ও নতুন বাজারে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে। তবে তৈরি পোশাকের বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইতালি ও জার্মানির মতো দেশে রপ্তানি কমেছে।
 
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এ তথ্য জানিয়েছে। এতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ৪ হাজার ৩৮৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেশি।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ইইউর বাজারে দুই হাজার ১৬৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি।

ইইউর মধ্যে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের বড় বাজার জার্মানি ও ইতালি। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসে জার্মানির বাজারে ৫৪২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ১২ শতাংশ কম। একই সময় ইতালির বাজারে পণ্য রপ্তানি করেছে ১৯৩ কোটি ডলার; যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৬ দশমিক ১০ শতাংশ কম।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানির নেতিবাচক ধারা থেকে এখনো বের হতে পারেনি বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের জুলাই-মে পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ৭৪৭ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। রপ্তানির এ অংক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ কম। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৭৭৩ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। আলোচিত সময় কানাডার বাজারেও রপ্তানি করেছে দশমিক ৩১ শতাংশ। এসময় ১৩৮ কোটি ডলারের পোশাক পণ্য রপ্তানি করেছে যা আগের অর্থবছরের একই সময় ছিল ১৩৯ কোটি ডলার।  

তবে যুক্তরাজ্যের বাজারে পোশাক রপ্তানি ইতিবাচক ধারা অব্যাহত আছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের বাজারে ৫১৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়; যার  প্রবৃদ্ধির হার ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

বিজিএমইএ জানায়, নতুন বাজারে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ৮১৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রপ্তানি বেড়েছে ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ। নতুন বাজারের মধ্যে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়ায় তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়লেও ভারতে কমেছে। ভারতে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ৭২ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে; যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২৩ শতাংশ কম। গত বছর এসময় প্রতিবেশী দেশটিতে রপ্তানি হয়েছিল প্রায় ৯৫ কোটি ডলার।

বিশ্ববাজারে পোশাকের চাহিদা কমে যাওয়ায় রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হার কমেছে জানিয়ে সংসদে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের চাহিদা বিশ্ববাজারে কমে যাওয়ার কারণে রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হার কমেছে।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪৬ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের (৪ হাজার ৬৯০ কোটি ডলার) তৈরি পোশাক বিদেশে রপ্তানি হয়। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) জুলাই-মে সময়ে তৈরি পোশাক খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৩ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (৪ হাজার ৩৮৫ কোটি ডলার) এবং প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

এসআই/এসএম