ঈদের ছুটি শেষে খুলছে অফিস-আদালত। ত‌বে রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজারে এখনও বিরাজ করছে ঈদের আমেজ। বাজারে তুলনামূলক গরু ও মুরগির মাংসের চাহিদা কম থাকলেও দাম আকাশছোঁয়া। 

বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের পর বাজারে পর্যাপ্ত মুরগি নেই তাই দাম বেড়েছে। এছাড়া গরুর মাংসের বাজারেও একই অবস্থা।

শুক্রবার (২১ জুন) রাজধানীর বাড্ডা-রামপুরা এলাকার একাধিক বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদের পরপর বাজার কিছুটা নিম্নমুখী তবুও বেড়েছে মুরগির দাম। কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০-২০০ টাকা, দেশি মুরগি ৭০০-৭৩০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৩৬০ টাকায়। আর প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায়।

এছাড়া, বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৮৫০ টাকায়। এছাড়া, প্রতি কেজি খাসির মাংস ১০৫০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।

ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পান। 

বিক্রেতারা বলছেন, কোরবানি ঈদের পর সাধারণত বাজারে ব্রয়লার মুরগির চাহিদা কম থাকে। দামও থাকে পড়তির দিকে। কিন্তু এবার বাজারে সে চিত্র দেখা যায়নি। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।

মামুনুল ইসলাম নামে বেসরকারি এক চাকরিজীবী বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে বাসায় মেহমানরা আসেন, তাদের তো শুধু গরুর মাংস দিয়ে খাওয়ানো যায় না। মুরগির মাংসও দরকার হয়। বাজারে এসে দেখি দাম কিছুটা বাড়তি।

তিনি বলেন, সাধারণত এই সময়টায় গরু-মুরগি সবকিছুর দামই কম থাকে। কিন্তু এবার কমেনি বরং বেড়েছে।

রুবেল মিয়া নামে এক দিনমজুর বলেন, ঈদে তো আমরা কোরবানি দিতে পারি না। আমাদের জন্য মুরগির মাংসই সম্বল। কিন্তু দাম তো কমেনি বরং বেড়েছে।

তিনি বলেন, গরু-খাসির মাংসের দাম অনেক বেশি, তাই ব্রয়লার মুরগি কিনেছি। বাজারে ব্রয়লার মুরগির দামও বেশি, প্রতি কেজি ব্রয়লার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রয়কর্মী রুবেল মিয়া বলেন, সবাই তো কোরবানি দেয়নি। তাছাড়া প্রতিদিন তো গরুর মাংস খাবে না। হোটেলেও প্রতিনিয়ত দরকার হয় মুরগির। সে জন্য চাহিদা কমেনি, দামও কমেনি।

নাঈম হাসান নামে আরেক মাংস বিক্রেতা বলেন, অনেকে ভাবে কোরবানির ঈদের সময় বাজারে মাংসের দাম কমে যায়, কিন্তু এ ধারণা ভুল। বরং অন্যদিনের চেয়েও এসময় বেশি পরিমাণে মাংস বিক্রি হয়, দামও থাকে বেশি। অনেকে আছেন কোরবানি দিতে পারেননি, আবার অনেকে ছুটি না পাওয়ার কারণে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যেতে পারেনি। তারাই কোরবানির সময়ে বাজারে মাংস কেনার ক্রেতা।

ঈদের একদিন আগেও বাজারে দাপট ছিল গরুর মাংসসহ ব্রয়লার ও অন্য মুরগির। সপ্তাহ খানেক আগে (১৫ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্যবসায়ীরা ৭৮০ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রি করছেন। পাশাপাশি খাসির মাংস বিক্রি হয়েছে ১১০০ টাকায়।

টিআই/এমএসএ