এনআরবিসি ব্যাংকের একাদশ বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়েছে। এজিএমে ২০২৩ সালের জন্য ১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন করেন শেয়ারহোল্ডারবৃন্দ। 

সভায় গত বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, ডাইরেক্টরস রিপোর্ট, পরিচালক ও স্বতন্ত্র পরিচালকদের নিয়োগ/পুনঃনিয়োগ, নিরীক্ষক নিয়োগ অনুমোদন করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমালের সভাপতিত্বে হাইব্রিড পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত সভায় সশরীর ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পরিচালক, উদ্যোক্তা ও শেয়ারহোল্ডারবৃন্দ অংশ নেন।

সভায় ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজু, পরিচালক মোহাম্মদ আদনান ইমাম, এ এম সাইদুর রহমান, মোহাম্মদ ওলিউর রহমান, আবু বকর চৌধুরী, লকিয়ত উল্লাহ, মোহাম্মদ নাজিম, একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক এয়ার চিফ মার্শাল (অব.) আবু এশরার, ড. খান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, ড. রাদ মজিব লালন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. রবিউল ইসলাম, ডিএমডি ও সিএফও হারুনুর রশিদ এবং কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আহসান হাবিব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যাংকের আমানত ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে ৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা। আগের বছর যা ছিল ১৬ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। ঋণের পরিমাণ ১৩ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৫০৯ কোটি টাকা। ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ শতাংশ। বছর শেষে পরিচালন মুনাফা ৩৫৬ কোটি টাকা এবং নিট মুনাফা হয়েছে ১৮৫ কোটি টাকা। শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ২৩ পয়সা। এছাড়া গত বছর ব্যাংকটির মাধ্যমে আমদানি হয়েছে ৩ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা এবং রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ১৯২ কোটি টাকা ও রেমিট্যান্স এসেছে ৭ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা।

এজিএমে অংশ নেওয়া সব পরিচালক, শেয়ারহোল্ডার, গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল বলেন, এনআরবিসি ব্যাংক নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে কাজ করছে। এক্ষেত্রে নারী, প্রশিক্ষিত যুবা ও সমাজের অন্যান্য পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কাজ করছে। ইতোমধ্যে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষিত যুবাদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে বিনা জামানতে সহজশর্তে ঋণ দিচ্ছে। শহরমুখী কমাতে এবং মহাজনি সুদ থেকে মুক্তি দিতে ক্ষুদ্রঋণের মতো কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এনআরবিসি ব্যাংকের প্রশংসিত এই উদ্যোগের সাথে যুক্ত হয়েছে প্রায় ৮৬ হাজার ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। 

তিনি বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত এনআরবিসি ব্যাংকের অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ নেটওয়ার্ক বিস্তৃত। ফলে সাধারণ মানুষ বাড়ির কাছেই ব্যাংকের সেবা পাচ্ছে। আবার  প্ল্যানেট অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসেই ‘রিয়েল টাইম ব্যাংকিং’ করতে পারছে। এছাড়া, সাধারণ মানুষের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে ব্যাংক সেবা সাজিয়ে থাকে।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্বে) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, সমসাময়িক ব্যাংকগুলোর তুলনায় সব আর্থিক সূচকে এগিয়ে আছে এনআরবিসি ব্যাংক। গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নই ব্যাংকের মূল লক্ষ্য। গ্রামীণ বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারীদের জন্য অধিকাংশ শাখা-উপশাখা এবং অন্যান্য সেবাকেন্দ্র। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে গ্রাহক সেবা দিয়ে থাকে; যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। 

উল্লেখ্য, উপশাখার ধারণার প্রবর্তক এনআরবিসি ব্যাংকের সেবাকেন্দ্রের সংখ্যা প্রায় দেড় সহস্রাধিক। এরমধ্যে পূর্ণাঙ্গ শাখা ১০৬টি ও উপশাখার সংখ্যা ৬৯০টি। এনআরবিসি ব্যাংক বিআরটিএর ফি গ্রহণ, ভূমি নিবন্ধন ফি আদায় করছে। এছাড়া, প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং সেবা দিয়ে যাচ্ছে প্রায় ৬০০টি এজেন্ট পয়েন্ট। ২০২১ সালে সাধারণ  বিনিয়োগকারীদেরও অংশগ্রহণ  নিশ্চিত করছে পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত হয় ব্যাংকটি।

এমএ