সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ও অবাধ তথ্য প্রবাহ প্রকা‌শে বাধার প্রতিবা‌দে বা‌জেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদা‌রের বক্তব্য বয়কট করেছেন অর্থনী‌তি বি‌টের সাংবা‌দিকরা।

শুক্রবার (৭ জুন) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অর্থ মন্ত্রণালয় আয়োজিত বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব ক‌রেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, পরিকল্পনা মন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব) আব্দুস সালাম, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বাণিজ্যমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। 

সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন অর্থ সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার।

প্রশ্নোত্তর প‌র্বের শুরু‌তে অর্থনী‌তির সাংবা‌দিকদের প‌ক্ষে ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা জানান, গভর্নর দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার বন্ধ ক‌রে রে‌খে‌ছেন। আমরা এ নি‌ষেধাজ্ঞা প্রত্যাহা‌রের দা‌বি ক‌রে আস‌ছি। কিন্তু গভর্নর মা‌নে‌ননি। এজন্য আজ‌ গভর্নরের বক্ত‌ব্য বয়কট কর‌ব আমরা। 

এ সময় অস্বস্তির মধ্যে প‌ড়েন গভর্নর এবং অর্থমন্ত্রী‌কে ইশারা দেন, বক্তব্য দে‌বেন না।

প‌রে খেলা‌পি ঋণ, অর্থপাচারসহ ব্যাংক খা‌ত নি‌য়ে সাংবা‌দিক‌দের প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান ও অর্থ সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার। এ সময় গভর্নর চুপ ক‌রে ব‌সেছি‌লেন।

এর আগে গতকাল জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয় ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। বিশাল অংকের এ বাজেটের ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।

প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। করবহির্ভূত ও অন্যান্য আয়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। কর ছাড়া প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক অনুদান থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করেছে। যদিও গত ১৪ মাস ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে রয়েছে। আগামী অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ঠিক করেছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। যা চলতি অর্থবছরে ছিল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। পরে তা কমিয়ে সাড়ে ৬ শতাংশ করা হয়।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। যদিও সংশোধিত বাজেটের এ আকার কমে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ১৪ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা।

এসআই/এমএইচএন/এসআর/এমএসআই/আরএইচটি/এসকেডি