২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট স্মার্ট-উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়ক হবে বলে মনে করছে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিসিসিআই)। 

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বাজেট প্রতিক্রিয়ায় সিসিসিআই সভাপতি ওমর হাজ্জাজ এ কথা বলেন। 

সিসিসিআই সভাপতি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আগামী ৫ বছরের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অন্যতম অঙ্গীকার এ বাজেট।

ওমর হাজ্জাজ বলেন, তৈরি পোশাকের পর তথ্য প্রযুক্তি খাতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এ বাজেটে। এছাড়া এতে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়নসহ স্মার্ট জনগোষ্ঠী তৈরির প্রয়াস রয়েছে।

চট্টগ্রাম-ঢাকা অর্থনৈতিক করিডোরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বে-টার্মিনাল, মেঘনা নদী থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত পানি সরবরাহ এবং চট্টগ্রাম নগরীকে ব্যবসা-বান্ধব নগরীতে পরিণত করতে বাজেটে বিশেষ উন্নয়ন বরাদ্দ রাখার আহ্বান জানান তিনি।

চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি বলেন, বাজেটে মোট ব্যয় ৭ লক্ষ ৯৭ হাজার কোটি টাকা, মোট আয় ৫ লক্ষ ৪১ হাজার কোটি টাকা এবং মোট ঋণ ২ লক্ষ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেওয়া হবে। ঘাটতি বাজেট মোকাবিলায় বৈদেশিক ঋণের চেয়ে অভ্যন্তরীণ উৎসে গুরুত্ব দেওয়াই দেশীয় সক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ।

তিনি বলেন, সরকার ২০২৪-২৭ সালের রপ্তানি নীতি খসড়া চূড়ান্ত করেছে। অথচ দেশের অভ্যন্তরীণ শিল্পায়নের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখা শিল্প মন্ত্রণালয়ের গতবারের চেয়ে কম বরাদ্দ শিল্প উন্নয়নের ক্ষেত্রে সহায়ক নয়। তাই এই মন্ত্রণালয়ের বাজেট বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মূল্যস্ফীতি। বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬.৫% এর মধ্যে সীমিত রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও বাস্তবে দুই বছর যাবত মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশেরও বেশি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চাপে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির এলসি-তে ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কর্তনকৃত কর পূর্বের ২% থেকে কমিয়ে ১% নির্ধারণ করা হয়েছে যা আশাব্যঞ্জক।

তিনি আরও বলেন, বাজেটে স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা ও ফার্মের করধাপ ও করহার নতুন শ্রেণি বিন্যাস অনুযায়ী মধ্যম আয়ের করদাতাদের উপর করের চাপ কিছুটা কমে আসবে যা তাদের জন্য মূল্যস্ফীতির চাপ মোকাবিলায় এবং অভ্যন্তরীণ বাজার চাহিদা সচল রাখতে সহায়ক হবে। কিন্তু অধিক আয়ের করদাতার করের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় সামগ্রিক বিনিয়োগের উপর কিছুটা বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। ১৫% কর পরিশোধের মাধ্যমে অপ্রদর্শিত আয় বা সম্পদকে প্রদর্শন করার যে সুযোগ রাখা হয়েছে তা অর্থ পাচার রোধে ভূমিকা রাখতে পারে।

প্রাইভেট কোম্পানির করহার শর্তসাপেক্ষে ২৭.৫% থেকে ২৫% করা হয়েছে এবং এক ব্যক্তি কোম্পানির ক্ষেত্রে ২২.৫% থেকে ২০% করা হয়েছে যা বিনিয়োগ বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আইটি-ভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমকে ক্যাশ-লেস হবার শর্তে ৩ বছর করমুক্ত রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা প্রশংসনীয়।

কিছু কিছু দেশীয় শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে যা ইতিবাচক। নির্মাণ খাতে অত্যাবশ্যকীয় সব ধরণের ইটের উপর সুনির্দিষ্ট করহার বৃদ্ধি চলমান বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যয় আরও বাড়িয়ে দেবে যা নির্মাণ শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেও মত দেন তিনি।

আরএমএন/এমএসএ