বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী
২০৪১ সালে মাথাপিছু আয় হবে সাড়ে ১২ হাজার ডলার
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের ভিশন ২০৪১ সাল। সেই ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ মাথাপিছু আয় হবে কমপক্ষে ১২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনকালে এ কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
বাজেট পেশের সময় মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে বিশাল প্রত্যাশা দেখিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তার আশা অনুযায়ী, ২০৪১ সাল থেকে একজন বাংলাদেশি বছরে ১৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৫০ টাকা আয় করবেন। যদিও বর্তমানে মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৮৪ ডলার, গত অর্থবছর যা ছিল ২ হাজার ৭৪৯ ডলার। ফলে বছরের ব্যবধানে ৩৫ ডলার বেড়েছে। বর্তমানে টাকার হিসাবে মাথাপিছু আয় ৩ লাখ ৬ হাজার ১৪৪ টাকা, যা গত অর্থবছর ছিল ২ লাখ ৭৩ হাজার ৩৬০ টাকা।
আরও পড়ুন
বিবিএস জানিয়েছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৫৯১ ও ২০২১-২২ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৯৩ ডলার।
অর্থমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশে দারিদ্রসীমার নিচে থাকবে ৩ শতাংশের কম। চরম দারিদ্র্য নেমে আসবে শূন্যের কোঠায়। মূল্যস্ফীতি সীমিত থাকবে ৪ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে। বাজেট ঘাটতি থাকবে জিডিপির ৫ শতাংশের নিচে, রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত হবে ২০ শতাংশের ওপর। বিনিয়োগ উন্নীত হবে জিডিপির ৪০ শতাংশে।
তিনি বলেন, শতভাগ ডিজিটাল অর্থনীতি আর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক স্বাক্ষরতা অর্জিত হবে। সবার দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে যাবে। স্বয়ংক্রিয় যোগাযোগ ব্যবস্থা, টেকসই নগরায়ণসহ নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সব সেবা থাকবে হাতের নাগালে। তৈরি হবে পেপারলেস ও ক্যাশলেস সোসাইটি। এসব কিছুর পেছনে মূল লক্ষ্য হবে সমতা ও ন্যায়ভিত্তিক একটি সুখী সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলা।
এটা অর্থমন্ত্রী আবুল হাসানের প্রথম ও স্বাধীন বাংলাদেশের ৫৩তম বাজেট। নানা সংকটের মধ্যেও নতুন অর্থমন্ত্রী স্বপ্ন দেখছেন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে। এজন্য এবারের বাজেট প্রতিপাদ্য ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। বিশাল অংকের এ বাজেটের ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। করবহির্ভূত ও অন্যান্য আয়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। কর ছাড়া প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক অনুদান থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করেছে। যদিও গত ১৪ মাস ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে রয়েছে। আগামী অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ঠিক করেছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। যা চলতি অর্থবছরে ছিল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। পরে তা কমিয়ে সাড়ে ৬ শতাংশ করা হয়।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। যদিও সংশোধিত বাজেটের এ আকার কমে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ১৪ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা।
এমএইচডি/এসকেডি