গত সপ্তাহে যে রুই মাছ কিনেছি ৪০০ টাকা কেজি দরে, সেই মাছের দাম এ সপ্তাহে ৫০ টাকা কমেছে। এটা পুরোপুরি স্বস্তির না হলেও অন্তত কিনে খাবার একটা পর্যায় এসেছে। 

কথাগুলো বলছিলেন ঢাকার একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা আশ্রাফ আলী আকন। বাসাবোর মাদারটেক মাছ বাজারে মাছ কিনতে আসা আরেক ক্রেতা সিদ্দিকুর রহমানও একই ধরনের কথা বললেন। 

সিদ্দিকুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত সপ্তাহের চেয়ে এ সপ্তাহে দাম তুলনামূলক কম। তবে আরও কম হওয়া উচিত। মানুষ আসলে তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে পণ্য বা সেবা পেতে চায়। অতিরিক্ত দাম বাড়িয়ে কিছু কমালে যে স্বস্তি আসে সেটা তো আসলে স্বস্তি নয় বরং সহনশীলতা। 

এ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে মাঝারি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজিতে। আর ছোট সাইজের ইলিশের জন্য কেজিপ্রতি গুনতে হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। 

গেল সপ্তাহে প্রতিকেজি পাবদা ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও একই আকারের পাবদা এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়, গত সপ্তাহে ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হওয়া রুইমাছ এ সপ্তাহে কেজিতে ৫০ টাকা কমে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। তবে মাঝারি সাইজের রুইয়ের দাম নেওয়া হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩২০ টাকা। আর ছোট সাইজের রুই কেজিপ্রতি ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ৪০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া কাতলার দাম কেজিতে ৫০ টাকা কমে এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। 

দাম কমেছে সিলভার কার্প, টাটকিনি এবং পাঙ্গাসেরও। এ সপ্তাহে বড় সাইজের সিলভার কার্প প্রতি কেজি ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে এ আকারের মাছের দাম ছিল প্রায় ৩০০ টাকা কেজি। ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া টাটকিনির দাম কেজিতে ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। ২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া চাষের কই কেজিতে ২০ টাকা কমে বিক্রি ২৪০ টাকায়। এ ছাড়া গত সপ্তাহে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া পাঙ্গাস এ সপ্তাহে ১৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তবে দাম বেড়েছে তেলাপিয়া মাছের। 

গত সপ্তাহে ২০০ টাকায় বিক্রি হওয়া তেলাপিয়া সপ্তাহ ঘুরে ২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বোয়াল ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, শোল ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছ বিক্রেতা কাশেম ভুইয়ার সাথে কথা হয় ঢাকা পোস্টের। তিনি বলেন, মাছের দাম সবসময় কমে-বাড়ে। স্থির থাকে না। দাম তো আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। দাম নির্ধারণ হয় আড়তে। সেখানে দাম কমলেই আমরাও কিছু কম দামে বিক্রি করতে পারি।

আরেক বিক্রেতা তবিবুর রহমান বলেন, মানুষের কেনার মতো দামে মাছ বিক্রি করছি। প্রায় সব মাছেই ৫০ থেকে ১০০ টাকা দাম কমেছে। কিন্তু সবসময় তো আর এমন দাম থাকবে না, বেড়ে যাবে। 

বাজার করতে আসা ইব্রাহিম খলিল বলেন, দামে তেমন একটা পরিবর্তন দেখি না। মধ্যবিত্তের তো মাছের বাজারে আসতে ভয় লাগে। আমাদের জন্য পাঙ্গাস মাছ ছাড়া আর কিছুই কেনার সাধ্য নেই। তবে অন্য সময়ের তুলনায় এখন দাম কিছুটা কম, এই যা স্বস্তি৷

বাজারে আসা ইউসুফ চৌধুরী বলেন, দাম অনেকটা কমেছে। আরও কমানো উচিত। সবকিছুতে একটা ভারসাম্য থাকা উচিত। দাম কমলে সবাই কিনবে। তাছাড়া অতিরিক্ত দামে কিনতে বাধ্য হলেও তো আমরা আসলে ভালো থাকি না৷

এমএম/এনএফ