বছরের পর বছর করমুক্ত সুবিধা পাওয়া রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) এবং হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগকারীদের ওপর স্বল্প মাত্রায় শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের বিনিয়োগকারীদের মূলধনি যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ, যানবাহন এবং আসবাবপত্র আমদানির ওপর ১ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে আগামী ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের বাজেটে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে বাইরে বিনিয়োগকারীদের সাথে সমান ক্ষেত্র তৈরি করা ও সুবিধা অপব্যবহার রোধ করার উদ্দেশ্য নিয়ে এমন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

এনবিআর সূত্র জানায়, ইপিজেড এবং হাই-টেক পার্কগুলোতে বিনিয়োগকারীদের আমদানি করা খুচরা যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ে তৈরি হয় এমন যন্ত্রাংশ ও আসবাবপত্র আমদানিতে ওই শুল্ক আরোপ হবে।

এবিষয়ে এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা কিছু সরঞ্জাম এবং খুচরা যন্ত্রাংশের ওপর আমদানি কর বাড়ানোর কথা বিবেচনা করছি যা বর্তমানে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হয়। যদিও এখনই প্রস্তাবিত বা বর্ধিত শুল্কের সঠিক হার যথাযথভাবে বলা যাচ্ছে না।

তবে অন্য একটি সূত্র বলছে, ইপিজেড বিনিয়োগকারীদের দ্বারা মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য প্রায় ১ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। তবে খুচরা যন্ত্রাংশ, সরঞ্জাম এবং আসবাবপত্রের জন্য শুল্ক আরেকটু বেশি হতে পারে।

বর্তমানে বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি মোট ১০টি ইপিজেড রয়েছে। বিনিয়োগ অবকাঠামো হিসেবে সারা দেশে ১০৯টি হাই-টেক পার্ক স্থাপনের কাজ করছে। বর্তমানে যার মধ্যে ২১টির নির্মাণ কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা, সিলেট, রাজশাহী ও যশোরের হাই-টেক পার্কগুলোতে শিল্প স্থাপনের জন্য স্পেস বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।

প্রাক-বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেছিলেন, কর সুবিধার কারণে, এখনও অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদিত পণ্যের জন্য আমদানির ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা রয়েছে। স্থানীয় শিল্পের বিকাশকেও আমাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমরা সুবিধাগুলো পুনরায় মূল্যায়ন করব।

এদিকে এলডিসি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও আইএমএফের পরামর্শ বিবেচনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে সম্পূরক শুল্ক কমানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সংস্থাটি। সম্পূরক শুল্কের এ হার ৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে এনবিআরের। তবে আগামী বাজেটে বিলাসী পণ্যের সম্পূরক শুল্ক কমানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।  শিল্প সুরক্ষা ও বিলাসী পণ্য বিবেচনায় প্রায় ১৯১ পণ্যের সম্পূরক শুল্ক হার পুনর্বিন্যাস করা হতে পারে বলে জানা গেছে।

আরএম/পিএইচ