স্থানীয় বাজারে অটো মোবাইল শিল্পের বিশাল সম্ভাবনা বিদ্যমান। কিন্তু বিশাল এই বাজারের চাহিদা মেটাতে গাড়ি ও যন্ত্রপাতির অধিকাংশ নিয়ে আসতে হয় বিদেশ থেকে। এই শিল্পের বিকাশ ও স্থানীয় বাজার ধরার পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে সরকারের সহযোগিতা চান এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। সরকারের নীতি সহায়তা পেলে দেশেই অটো মোবাইল প্রস্তুত ও উৎপাদন কার্যক্রম বিকশিত হবে বলে মনে করেন তারা।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড অ্যাসেম্বলারস্ বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম সভায় এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান এবং উত্তরা মটরস্ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মতিউর রহমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, আমাদের অর্থনীতি এখন অনেক বড়। অর্থনীতি বড় হওয়ার সাথে সাথে দেশে মোটর শিল্পের চাহিদাও অনেক বেড়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী আগাতে হবে। তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ব্যবসায় অতীতেও যেমন চ্যালেঞ্জ ছিল, এখনো আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। এর মধ্যেই বেসরকারি খাতের এগিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে হবে। 

এ সময় লাইট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিকাশের ওপরও জোর দেন তিনি।

অটোমোবাইল খাতে ম্যানুফ্যাকচারিং বা প্রস্তুতকরণে ব্যবসায়ীদের কাজ শুরু করার আহ্বান জানিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ব্যবসা চালাতে গাড়ি আমদানি করা হচ্ছে এবং হবেও। তবে আমদানি সারাজীবন নয়, এখন সময় হয়েছে আমরা গাড়ি প্রস্তুতকরণে দিকে মনোযোগী হওয়ার।

এজন্য কাউকে না কাউকে কাজ শুরু করতে হবে। এ সময় অটো মোবাইল উৎপাদনে বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহ-সভাপতি মো. হাবীব উল্লাহ ডন বলেন, ‌‘দেশের জনসংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতায় বাড়ছে। তবে জনসংখ্যার তুলনায় পর্যাপ্ত গণপরিবহন না থাকায় মানুষ ব্যক্তিগত গাড়ি কিনছে। এক্ষেত্রে রিকন্ডিশনড গাড়ি আমদানি দেশের অর্থনীতিকে বেগবান করছে। তবে আমদানির সঙ্গে সঙ্গে অ্যাসেম্বলিং এবং তারপর প্রস্তুতকরণে কাজ শুরু করতে হবে।’

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে ব্যবসায়ীরা দেশে অটোমোবাইল খাতের ভেন্ডর উন্নয়নে জোর দেন। তারা বলেন, অটোমোবাইল খাতের বিশাল বাজার রয়েছে সারা বিশ্বে। এসব বাজার ধরতে দেশে যন্ত্রপাতি তৈরিতে ভেন্ডর উন্নয়ন জরুরি। ভেন্ডর উন্নয়নে প্রণোদনাসহ লক্ষ্য নির্ধারণ করা উচিত।

এছাড়া অটোমোবাইল খাতের মেইটেইন্যান্সের জন্য আলাদা অঞ্চল নির্ধারণ করে দেওয়া, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসআরও-তে পরিবর্তন আনা, দেশে ইলেকট্রিক যানবাহন আমদানি সহজিকরণ করা, বিআরটিএ-তে যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া দ্রুততর করা, ব্যাংকগুলোকে একই নীতি অনুসরণ করাসহ অটোমোবাইল খাত সংশ্লিষ্ট সরকারের যেকোনো নীতিমালা প্রণয়নে অভিজ্ঞ ব্যবসায়ীদের মতামত গ্রহণ করার দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী, পরিচালক হাফেজ হাজী হারুন অর রশীদ, কাওসার আহমেদ, নিয়াজ আলী চিশতী, আমির হোসেন নূরানী, মহাসচিব মো. আলমগীর, কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও সদস্যরা।

এসআই/এমএ