পহেলা বৈশাখের প্রভাব ইলিশের গায়ে
আগামী রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ। পুরাতন বাংলা সালকে বিদায় দিয়ে নতুন বছরকে বরণে বাঙালিদের আয়োজনের শেষ থাকে না। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে মঙ্গল শোভাযাত্রা থেকে শুরু করে পান্তা-ইলিশ শোভা পায় বাঙালির পাতে। ঐতিহ্যবাহী এই উৎসবকে কেন্দ্র করে মাছের বাজারে রুপালি ইলিশের কদর থাকে তুঙ্গে।
পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে বাজারে ইলিশের প্রচুর চাহিদা। সে তুলনায় সরবরাহ কম। তাই বেশি দাম দিয়েই ইলিশ কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
ব্যবসায়ীদের দাবি, বর্তমানে ইলিশ কম ধরা পড়ছে। এজন্য বাজারে এর সরবরাহও কম। পাইকারি বাজারেই ইলিশের দাম বাড়তি। ইলিশের সরবরাহ বেশি থাকলে দাম কম থাকে। আপাতত চাহিদা গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে কিন্তু সেই তুলনায় সরবরাহ বাড়েনি।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) মিরপুরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বাজারে জাটকা ও ৭০০ এবং ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। এর থেকে বড় ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। মিরপুরর ১১ ও ৬ নম্বরে কয়েকটি মাছের দোকান খোলা রাখতে দেখা গেছে। ইলিশ, চিংড়ি, রুইসহ অল্প কিছু মাছ বিক্রি হচ্ছে এসব দোকানে। সবজি ও মুরগির বাজারে ক্রেতা ছিল কম।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিকেজি জাটকা বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায়। ৭০০ গ্রাম ইলিশ ১ হাজার ২০০ টাকা, ৮০০ গ্রাম ইলিশের দাম রাখা হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা। আর ১ হাজার টাকায় মিলছে ৫৫০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ। ছোট চিংড়ি প্রতিকেজি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মিরপুর ৬ নম্বর বাজারের ব্যবসায়ী মৃণাল বলেন, ঈদের ছুটিতে বেশিরভাগ মানুষ শহর ছেড়ে বাড়িতে চলে গেছে। অন্যান্য দিন শুক্রবার বেচাকেনা অনেক বেশি হলেও আজকে বাজারে ক্রেতা নেই। যে কয়েকটি দোকান খোলা আছে, সেগুলোতেও তেমন পণ্য নেই। ক্রেতা না থাকায় বেশিরভাগ দোকানি অলস সময় পার করছেন।
অন্যদিকে, চাঁদ রাতে ২৫০ টাকা দরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হলেও ১ দিনের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা।
মিরপুর-১১ নম্বর বাজারের এক বিক্রেতা বলেন, আজকে মুরগি আসেনি। অল্প কয়েকটা মুরগি আছে। আজ প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, লাল লেয়ার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে প্রায় ২০ থেকে ৩০ টাকা। প্রতিকেজি লাল লেয়ার ৩৮০ টাকা, আর সোনালী ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকায় আর গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, চিচিঙ্গা ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, উস্তে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, সজনে ডাটা ১০০ থেকে ১২০ টাকা, কাঁকরোল ১১০ থেকে ১৩০ টাকা, ধুন্দল ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ঝিঙে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, গাজর ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, লম্বা বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গোল বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মুলা ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজি ব্যবসায়ী মনসুর বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে সবজির দাম বাড়েনি। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। তারপরও আজকে ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। আগামী কয়েকদিন এভাবেই চলবে। এছাড়া, ঈদ উপলক্ষ্যে বাজারে সবজির সরবরাহ খুবই কম। দুই এক দিন পর থেকে সবজির চাহিদা বাড়বে।
এসআর/এসকেডি