ঈদের পূর্ব মুহূর্তে ছুটির দিন হওয়ায় রাজধানীর শপিং মল ও বিপণি বিতানগুলোতে আজ ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। জুমার নামাজের পর থেকেই মার্কেটগুলোর সামনের ফুটপাথ থেকে শুরু করে মূল দোকানে বাড়তে থাকে ক্রেতা সমাগম। ইফতারের পর যেন এসব এলাকায় পা ফেলার জায়গা নেই। সবখানেই মানুষ আর মানুষ। কেউ কিনছেন, কেউবা দেখছেন।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্ক, বাড্ডার সুবাস্তু নজর ভ্যালি মার্কেট ও শাহজাদপুরের কনফিডেন্স শপিংমল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, অন্যদিনের তুলনায় আজ ক্রেতাদের ভিড় অনেক বেশি। নিজের পছন্দের পোশাক কিনতে এক মার্কেট থেকে আরেক মার্কেটে ছুটে যাচ্ছেন ক্রেতারা। এদিকে ক্রেতাদের সন্তুষ্ট করতে চেষ্টার কোনো কমতি রাখছেন না বিক্রেতারাও। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিশেষ মূল্যছাড়ও দিচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান।

যমুনা ফিউচার পার্কে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন মনিরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী শামীমা রহমান। তারা জানান, ঈদের জন্য নতুন পোশাক কিনতে আজকে এসেছেন। দুজনেই চাকরি করেন তাই ছুটির দিনটিকে শপিংয়ের জন্য বেছে নিয়েছেন তারা।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ঈদের তো আর বেশি দিন বাকি নেই। আমরা চাকরি করি সময়ও পাই না। অনেক আগে থেকেই আমরা পরিকল্পনা করে রেখেছি আজকে মার্কেটে আসব। জুমার নামাজের পর এসেছি। এখন ঘুরে ঘুরে দেখছি। পাঞ্জাবি আগে দেখব।

এবারের ঈদে নতুন কী পোশাক ক্রয় করা হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে শামীমা রহমান বলেন, আমি অনলাইনে শাড়ি কিনেছি। এখন চুড়ি আর জুতা কেনার পরিকল্পনা আছে।

একই মার্কেটে চেয়ারে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন তানজিয়া শারমিন নামে আরেক ক্রেতা। তিনি বলেন, ছুটির দিন বলে আজ এসেছি। স্বামী ও শ্বশুর, শাশুড়ির জন্য কাপড় কেনা হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত নিজের ও বাচ্চাদের জন্য কাপড় কেনা হয়নি। তিন ঘণ্টা ধরে আছি মার্কেটে, পা ব্যথা করছে তাই একটু বিশ্রাম নিচ্ছি।

সুবাস্তু নজর ভ্যালি মার্কেটে গিয়ে কথা হয় সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, অফিস থাকায় সপ্তাহের অন্যান্য দিনে মার্কেটে আসতে পারি না। আজ ছুটির দিন বলে আসতে পেরেছি। সবার জন্য কেনাকাটা করেছি। তবে আজ মার্কেটে মানুষের অনেক ভিড়, তাই ঘুরতে একটু কষ্ট হয়েছে।

এদিকে সুবাস্তু টাওয়ারের সামনের ভ্যানে বাচ্চার জন্য জামাকাপড় দেখছেন রবিউল আলম নামক এক ক্রেতা। তিনি বলেন, এক ঘণ্টা মার্কেটে ঘুরেছি, ওখানে পছন্দ হয় কিন্তু দামে মিলে না। আবার দামে মিললে পছন্দ হয় না। তাই বের হয়ে বাইরে দেখছি মেলানো যায় কি না। এবার জিনিসপত্রের অনেক দাম। গত ঈদের তুলনায় প্রতিটি জামায় অন্তত ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি দাম চাচ্ছে।

রবিউল আলম বলেন, নিজের জন্য কিছু না কিনলেও তো বাচ্চাদের জন্য কিছু কিনতে হবেই। দামে মিললে এখান থেকে আজ কিনব, নয়ত আগামীকাল অন্যকোনো দিকে দেখব।

শাহজাদপুর কনফিডেন্স শপিং সেন্টারে রিয়া ফ্যাশন নামে এক দোকানের ম্যানেজার ইমরান হোসেন বলেন, আজ ছুটির দিন তাই ক্রেতা বেশি। ক্রেতারা মার্কেটে আসছেন, ঘুরছেন, পছন্দমতো কাপড় কিনছেন। ঈদ উপলক্ষ্যে ক্রেতাদের যেন পছন্দ হয় এমন সব কাপড় দোকানে তুলেছি।

যমুনা ফিউচার পার্কের সেইলর ফ্যাশনের এক বিক্রয়কর্মী জানান, দুপুরের পর থেকে মার্কেটে প্রচুর ক্রেতা আসছেন। সন্ধ্যার পর থেকে তো একটু বিশ্রামেরও সুযোগ পাইনি। এই রমজানে আজকেই মনে হয় সর্বোচ্চ ক্রেতারা আসছেন।

অর্ভিয়া টাচ নামে শোরুমের ইনচার্জ রেজাউল হক বলেন, আমাদের দোকানে সব বয়সীদেরই জামা-কাপড় আছে। তবে বিক্রির দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে আছে বাচ্চাদের কাপড়। আশা করছি, ঈদের দিন পর্যন্ত ক্রেতা সমাগম আরও বাড়বে।

টিআই/এসকেডি