ঈদের পোশাক কেনাকাটায় পছন্দের শীর্ষে থাকে পাঞ্জাবি। ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ কিংবা বেড়াতে যাওয়া সব জায়গায় হাল ফ্যাশনের পাঞ্জাবি পরতে পছন্দ করেন তরুণ যুবক থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও।

ক্রেতাদের এমন চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতি বছরের মতো এবারো বাহারি পাঞ্জাবির পসরা দিয়ে শোরুম সাজিয়েছেন দোকানিরা। তবে ঈদের আরও ১৭ দিন বাকি। তাই এখনো জমে ওঠেনি পাঞ্জাবির বাজার।

রোববার (২৪ মার্চ) রাজধানীর বসুন্ধরা, এলিফ্যান্ট রোড, নিউ মাকের্টসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার ঈদে হবে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে। তখন বৈশাখ মাস শুরু হয়ে যাবে। গরমও পড়তে শুরু করবে। ঈদের সময়ের তাপমাত্রার কথা মাথায় রেখে এবার পাঞ্জাবির কাপড় তৈরি ও ডিজাইন করা হয়েছে। ডিজাইনের ক্ষেত্রে এসময়ের ফ্যাশনের হালচালেও নজর রাখা হয়েছে। ফ্যাশন সচেতনদের জন্য এবার সুতির ও হালকা রঙের তাপরোধী পোশাক তৈরি করা হয়েছে।

এলিফ্যান্ট রোডের মহাভার পাঞ্জাবি শো রুমের মালিক এ কে আজাদ বলেন, এবার ঈদ সামনে রেখে বাহারি রঙ ও ডিজাইনের পাঞ্জাবির এসেছে। বাংলাদেশে বেশিরভাগ পাঞ্জাবি ভারত থেকে আসে। এজন্য কাপড় ও ডিজাইন পছন্দে বাংলাদেশের আবহাওয়া ও সময়ের হালচাল মাথায় রাখতে হয়। এবার অন্য বছরের চেয়ে ভিন্ন কিছু ডিজাইনের পাঞ্জাবি এসেছে।

দামে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার একটু বেশি বাজেট নিয়ে পাঞ্জাবি কিনতে হবে।

বসুন্ধরার পাঞ্জাবি বাজার এখনো সেভাবে না জমলেও ক্রেতারা দেখতে আসছেন বলে জানান আড়ংয়ের সেলসম্যান আবিদ হাসান। তিনি বলেন, এখনো মহিলা ও বাচ্চাদের কাপড় বেশি বিক্রি হচ্ছে। ১৫ রমজানের পর মূলত পাঞ্জাবি বিক্রি বাড়বে। সবাই এখন এসে পছন্দ করে ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছে।

লা রিভ ফ্যাশন হাউজের সেলসম্যান মুস্তাকিম মানিক বলেন, করোনার পর এবার প্রথম সবচেয়ে বেশি পাঞ্জাবির কালেকশন এসেছে। গত কয়েক বছরের মতো এবারও সুতি পাঞ্জাবির বেশি চাহিদা থাকবে। এরপর সিল্ক, লিনেন, রিমি কটন, ফাইন কটনের পাঞ্জাবির চাহিদা থাকবে। সেই অনুযায়ী বিভিন্ন দামের পাঞ্জাবি আনা হয়েছে।

পাঞ্জাবির জন্য ক্রেতাদের সবচেয়ে বেশি পছন্দ ব্র্যান্ড দর্জিবাড়ি, এক্সটেসি, ইয়েলো, লা-রিভ, আড়ং, লুবনান। এছাড়াও দেশীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ড নানা রঙের পাঞ্জাবি এনেছে। বয়স ও পছন্দভেদে বিভিন্ন রকমের ফতুয়া, কাবলি পাঞ্জাবি, লং পাঞ্জাবি ও শর্ট পাঞ্জাবি এবার বাজারে এসেছে।

এবার পাকিস্তানি এমব্রয়ডারি ডিজাইনের কিছু পাঞ্জাবি সবার নজর কাড়বে বলে জানান আজিজ সুপার মার্কেটের পাঞ্জাবি বিক্রেতা মোর্শদ জামান। তিনি বলেন, গত ঈদে পাকিস্তানি এমব্রয়ডারি কিছু পাঞ্জাবি এনেছিলাম। বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এবার প্রায় তিন হাজার পাকিস্তানি পাঞ্জাবি এসেছে আমার দোকানে।

তিনি বলেন, পাকিস্তানি পাঞ্জাবির অন্যতম সুবিধা সুতি কাপড়ের, যা পরতে খুব আরামদায়ক পাশাপাশি ফ্যাশনেবল।

দরদাম কেমন

সাদা রঙের সুতির পাঞ্জাবি ৪৫০ থেকে শুরু করে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে কালো রঙের বিশেষ সুতির পাঞ্জাবি ১ হাজার থেকে শুরু করে ৩৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাদি সিল্ক পাঞ্জাবি ১২০০ থেকে ৭৫০০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে হাতের কাজ হলে দাম শুরু হবে ৫০০০ টাকা থেকে। সর্বোচ্চ নির্ভর করবে কাজের ওপর।

বিভিন্ন ডিজাইনের হাফ সিল্ক পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকার মধ্যে। নানা ধরনের ডিজিটাল প্রিন্টেড রেডিমেড কটন পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে। লিনেন কটন ডিজাইনে পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে ১৯০০ থেকে ৮০০০ টাকার মধ্যে। এছাড়াও ট্রেন্ডি ডিজাইনের রেডিমেড ফ্যাশনেবল ইন্ডিয়ান কটন কোটি বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে।

এনএম/এসএসএইচ