করোনার প্রণোদনা থেকে উপেক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী-চিকিৎসকরা
করোনাকালে দায়িত্বরত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষ সম্মানি প্রদান করা হবে- সরকারের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা দেওয়া হলেও প্রণোদনার এক লাখ ২৪ হাজার ৫৩ কোটি টাকার মধ্যে এক টাকাও খরচ হয়নি করোনার সম্মুখসারির যোদ্ধাদের পেছনে। অথচ রফতানিমুখী পোশাকশিল্পের জন্য বরাদ্দের পুরো অর্থই খরচ হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
দেশে করোনাভাইরাসের ধাক্কা কাটিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ছোট-বড় ২৩টি প্রণোদনা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে সরকার। বিভিন্ন সময় নেওয়া এসব কর্মসূচিতে বরাদ্দ দেওয়া মোট অর্থের পরিমাণ এক লাখ ২৪ হাজার ৫৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে কর্মসূচির মাত্র ৫২ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। তবে একেবারেই অর্থ খরচ হয়নি বা প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়িত হয়নি এমন চারটি কর্মসূচির কথা জানাল বিশ্ব ব্যাংক।
বিজ্ঞাপন
এর মধ্যে রয়েছে- করোনাকালে দায়িত্বরত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষ সম্মানী প্রদান; বয়স্ক নাগরিক, বিধবা ও ডিভোর্সিদের ভাতা কর্মসূচি।
সোমবার (১২ এপ্রিল) বিশ্ব ব্যাংকের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেটে এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল করতে সরকারের ২৩টি কর্মসূচি চলছে। ২৩টির মধ্যে শতভাগ বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র দুটি কর্মসূচি। রফতানিমুখী শিল্পের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দেওয়া এবং ১০ টাকা কেজিতে চাল বিক্রি এই দুটি প্রণোদনা কর্মসূচিতে বরাদ্দ করা পুরো টাকা খরচ করা সম্ভব হয়েছে। অন্যদিকে, চারটি কর্মসূচিতে কোনো টাকা খরচ হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলেছে। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে। প্রবৃদ্ধির কমা-বাড়া ব্যাপারটি তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করছে। টিকাদান কর্মসূচির গতিপ্রকৃতি; চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ; বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কতটা হয়— এসব বিষয়ের ওপর নির্ভর করে বিশ্ব ব্যাংক প্রবৃদ্ধির ন্যূনতম ও সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করেছে। কোভিড পরিস্থিতির কারণে সবকিছুই খুব অস্থিতিশীল। সামনের দিনগুলোতে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। যদি সবকিছু ঠিক মতো চলে, তাহলে ৫ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি হতে পারে।
বিশ্ব ব্যাংকের মতে, করোনার প্রথম ধাক্কা সামাল দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় অর্থনীতির গতিপ্রকৃতির ওপর প্রবৃদ্ধি ওঠানামা করতে পারে। যদিও সামনের দিনগুলোতে অর্থনীতিতে ব্যাপক অনিশ্চয়তা আছে।
আরএম/এফআর/জেএস