‘একদিনও সরকারি দামে ডিম-আলু-পেঁয়াজ কিনতে পারিনি’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে ২০ দিনেরও বেশি হয়ে গেছে। কিন্তু সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম কেউেই মানছে না, আগের সেই চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে এই তিন পণ্য।
বেঁধে দেওয়া দাম অনুযায়ী আলুর কেজি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা, পেঁয়াজের দাম ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা ও প্রতি পিস ডিম বিক্রি হওয়ার কথা ছিল ১২ টাকা। কিন্তু সেই জায়গায় প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা কেজি করে। এছাড়া প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩.৭৫ টাকা করে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
এ বিষয়ে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে তারা আলু, পেঁয়াজ ও ডিম পাইকারিতেও কিনতে পারছে না, তাহলে বিক্রি করবেন কীভাবে। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম কেউেই মানছে না। ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে দাম বাড়িয়ে রেখেছেন। বাজার মনিটরিং নেই বলে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দামে কারসাজি করছেন।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর বাড্ডা কাঁচাবাজার, শাহজাদপুর কাঁচাবাজার ও রামপুরা কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
মো. মঞ্জু রাজধানীর শাহজাদপুর কাঁচাবাজারে আলুসহ বিভিন্ন সবজি বিক্রি করে থাকেন। তার দোকানে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি আলু ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে যা নির্ধারিত দামের তুলনায় ১৫ টাকা বেশি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতি কেজি আলু পাইকারি বাজার থেকে কিনে দোকানে নিয়ে আসতে ৪৫ টাকার ওপরে খরচ হয়। এখন ৪৫ টাকা কেজি দরে আলু কিনে ৩৫-৩৬ টাকা করে বিক্রি কীভাবে করব। পাইকারি বাজারে কম দামে যদি কিনতে পারি তাহলে খুচরা বাজারেও আমরা কম বিক্রি করতে পারব।
রামপুরা কাঁচাবাজারের মুদির দোকানি মো. মাইন উদ্দিন নির্ধারিত দামের থেকে প্রায় ২ টাকা বেশি দামে প্রতি পিস ডিম ও প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৫-২৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছেন। এই বেশি দামের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের পক্ষে।নির্ধারিত দামে ডিম ও পেঁয়াজ বিক্রি করা সম্ভব না। এর থেকে বেশি দামে কিনে এনে কীভাবে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে বিক্রি করব।
তবে ব্যবসায়ীদের এসব কথায় বিশ্বাস করছেন না ক্রেতারা। তারা বলছেন, ব্যবসায়ীদের কথা শুনলে মনে হয় তারা এই দামে বিক্রি করেও খুশি না। ব্যবসায়ীরা সবাই একে অপরে মিলে বাড়তি দামে এসব পণ্য বিক্রি করতেছে। অজুহাত হিসেবে তারা সবাই একই কথা বলছে।
শাহজাদপুর কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা রবিউল আউয়াল বলেন, যখন ঘোষণা হয়েছিল সরকার নির্ধারণকৃত দামে আলু, পেয়াজ ও ডিম বিক্রি হবে তখন কিছুটা আশাবাদী হয়েছিলাম। কিন্তু সত্যি কথা হচ্ছে দাম নির্ধারণ করার পর একদিনও সেই নির্ধারণকৃত দামে এই তিনটি পণ্যের একটিও কিনতে পারিনি।
বাড্ডা কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা ফাহাদ কবির বলেন, ব্যবসায়ীরা সবসময়ই একই কথা বলে যে, তারা বেশি দামে কিনে কীভাবে কম দামে বিক্রি করবে। কিন্তু সরকার যখন দাম নির্ধারণ করে দেয় তখন তো সবকিছু বিবেচনা করেই নির্ধারণ করেছে। দুঃখের বিষয় হলো দাম নির্ধারণের পরে নিয়মিত বাজার মনিটরিং না থাকায় ব্যবসায়ীরা এভাবে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতেছে। আজকে যদি নিয়মিত বাজার মনিটরিং থাকতো দেখা যেত ব্যবসায়ীরা যেসব অজুহাত দেখাচ্ছেন তার সবগুলো মিথ্যা।
এমএসি/এমএ