ডলার কারসাজিতে জড়িত ১০ ব্যাংককে জরিমানা
নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি মূল্যে আমদানিকারকের কাছে ডলার বিক্রির অপরাধে বেসরকারি খাতের ১০ ব্যাংককের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে জরিমানা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রোববার (১ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১০৯ (৭) ধারা অনুযায়ী, বেশি মূল্যে ডলার বিক্রির অপরাধে ১০ ব্যাংককের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে জরিমানা জরিমানা করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
বিজ্ঞাপন
বেশি দামে ডলার বিক্রি করার অভিযোগে বেসরকারি খাতের ১০ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সেপ্টেম্বরে মাসে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এসব ব্যাংকের ট্রেজারি-প্রধানকে জরিমানা করার প্রক্রিয়া শুরু করে।
ট্রেজারি বিভাগ ব্যাংকের টাকা ও ডলারের চাহিদা-জোগানের বিষয়টি নিশ্চিত করে থাকে। কোনো কোনো ব্যাংকে ট্রেজারি বিভাগের প্রধান পদে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তাও রয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, ডলার বেচাকেনায় কারসাজির সঙ্গে জড়িত ১০ ব্যাংকের মধ্যে প্রচলিত ধারার ৭টি ও ইসলামি ধারার ৩টি ব্যাংক রয়েছে।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেছিলেন, বেশি দামে ডলার বিক্রির জন্য এসব ব্যাংকের ট্রেজারি-প্রধান দায় এড়াতে পারেন না। এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ডলার কারসাজিতে অভিযুক্তদের কী শাস্তি দেওয়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১০৯ (৭) ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেখানে শাস্তির বিষয় উল্লেখ করা আছে।
ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১০৯ (৭) ধারা অনুযায়ী, এই অপরাধে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করা যেতে পারে। যদি আইনের একই ধারার লঙ্ঘন অব্যাহত থাকে, তাহলে প্রথম দিনের পর প্রতিদিনের জন্য অতিরিক্ত এক হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা যায়।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত মার্চের পর থেকে দেশে ডলার-সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এ সংকট মোকাবিলায় শুরুতে ডলারের দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু তাতে সংকট আরও প্রকট হয়। পরে গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এ দায়িত্ব দেওয়া হয় ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন-অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এর ওপর। এরপর দুই সংগঠনের নেতারা বিভিন্ন লেনদেনে ডলারের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ শুরু করেন। তবে কিছু ব্যাংক ডলারের নির্ধারিত দামের চেয়ে ৫ থেকে ৬ টাকা বেশি দরে ডলার কেনাবেচা করছে বলে অভিযোগ উঠে। কারসাজির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের জরিমানার কবলে পড়তে হলো।
এসআই/এসকেডি