বিনিয়োগকারীদের মূলধন কমেছে ২ হাজার কোটি টাকা
পুঁজিবাজার আরও খারাপ হতে পারে– এই আশঙ্কার মধ্য দিয়ে আগস্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পার করল দেশের পুঁজিবাজার। আলোচিত এ সপ্তাহে দাম বাড়ার বিপরীতে কমেছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর। ফলে বিদায়ী সপ্তাহে কমেছে লেনদেন ও সূচক। আর তাতে বিনিয়োগকারীদের বাজার মূলধন অর্থাৎ পুঁজি কমেছে ২ হাজার কোটি টাকা।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ২৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, বিপরীতে কমেছে ১৩৫টি কোম্পানির শেয়ারের দর। আর তাতে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের পুঁজি বা বাজার মূলধন কমেছে ২ হাজার কোটি টাকা। একই অবস্থা অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)।
বিজ্ঞাপন
ডিএসইর তথ্য মতে, গত ১৩ আগস্ট সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে লেনদেনের শুরুতে ডিএসইর মূলধন ছিল ৭ লাখ ৭৫ হাজার ৪৯৯ কোটি ৪৭ লাখ ১৪ হাজার টাকা। আর শেষ দিন বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) লেনদেন শেষে মূলধন দাঁড়ায় ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৩৩৫ কোটি ৯৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকায়। অর্থাৎ টাকার অঙ্কে পুঁজি কমেছে ২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। শতাংশের হিসাবে কমেছে দশমিক ২৮ শতাংশ। এর আগের সপ্তাহে মূলধন কমেছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে তিনদিন পতন আর একদিন সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম তিন কর্মদিবস রোব, সোম ও মঙ্গলবার দরপতন হয়েছে। এরপর বৃহস্পতিবার সূচক সামান্য বেড়েছে। আরও দরপতন হতে পারে– এই ভয়ে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করছেন বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে বাজারে লেনদেন হয়েছে মোট ৩৯১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এর মধ্যে ২৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, বিপরীতে কমেছে ১৩৫টি কোম্পানির শেয়ারের দর আর অপরিবর্তিত ছিল ২২৯টির। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছিল ৩৫টির, কমেছিল ১৪৪টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২০৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের চেয়ে ৪২ দশমিক ৪২ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৫৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস সূচক ৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫৮ পয়েন্টে ও ডিএস-৩০ সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ৩১ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১২১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৪৯০ কোটি ৩৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৭১ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। অর্থাৎ ৫৮১ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন কমেছে, শতাংশের হিসাবে যা ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ।
গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। এরপর যথাক্রমে লেনদেন হয়েছে– রয়েল টিউলিপ সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা, সোনালী পেপার, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, জেমিনি সি ফুড, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, খান ব্রাদার পিপি ওভেন ব্যাগ, আরডি ফুড এবং এমারেল্ড অয়েল লিমিটেডের শেয়ার।
অন্যদিকে আলোচিত সপ্তাহে দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক ১২১ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৪৭৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এসময়ে লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ৯৭ লাখ ২৩ হাজার ৭৬৫ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৩৩ কোটি ১২ লাখ ৯১ হাজার ১৭৫ টাকা।
লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৭টির, কমেছে ১০৬টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।
এমআই/এসএসএইচ/