কমছেই না মাছের দাম
গত সপ্তাহ থেকে কিছুটা কমতে শুরু করেছে সবজির দাম। আর ব্রয়লার, সোনালী, ককসহ অন্যান্য মুরগির দাম কিছুদিন আগে বাড়লেও এখন সামান্য কমেছে। তবে বহাল রয়েছে মাছের বাজারের চড়া ভাব। দীর্ঘ দিন ধরেই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মাছ। এমনকি গরিবের সস্তা মাছ হিসেবে পরিচিত তেলাপিয়া, পাঙাশ, চাষের কইয়ের দামও বেশ বাড়তি যাচ্ছে।
শুক্রবার (১৬ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। ক্রেতারা বলছেন, বাজারে মুরগি, সবজির দাম বাড়ে আবার কমে। কিন্তু মাছের দাম কমার কোনো নাম নেই। অনেক দিন ধরেই একই রকমভাবে বাড়তি দামেই সব মাছ বিক্রি হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাঙাশ মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, চাষের কই ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শিং মাছ (ছোট) প্রতি কেজি ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা, গুড়া মাছ (কাচকি) ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, ট্যাংরা ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, রুই মাছ প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, সিলভার কার্ভ (ছোট) ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, বড় কাতল প্রতি কেজি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে দেখা গেছে যেসব সবজির মৌসুম এখন নয়, সেই সবজিগুলোর দাম কিছুটা বাড়তি যাচ্ছে। দেখা গেছে, বেগুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৫০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, ঝিঙা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, জালি কুমড়া প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা, খাসির মাংস মানভেদে প্রতি কেজি ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি ব্রয়লার ২০০ টাকা, সোনালী প্রতি কেজি ২৮০ এবং লাল লেয়ার ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর মালিবাগ বাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী নাজমুল হক মাছের দাম প্রসঙ্গে বলেন, বাজারে সবজি, মাংস, পেঁয়াজসহ সব জিনিসের দাম হঠাৎ বেড়ে যায় কিন্তু তা আবার কমে এক সময়। তবে মাছের বাজারের ক্ষেত্রে এটা উল্টো। দীর্ঘ দিন ধরে বাজারে সব ধরনের মাছের দাম বাড়তি যাচ্ছে কিন্তু এটা কমার কোন নাম নেই। সাধারণ ক্রেতাদের এতে সমস্যা হচ্ছে, এসব দেখার কি কেউ নেই? বাজার মনিটরিং করে বাড়তি দাম কমানোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত সংশ্লিষ্টদের।
এদিকে মহাখালী বাজারে মাছ কিনতে আসা গার্মেন্টস কর্মী আক্ষেপ করে বলেন, গরিবের মাছ পাঙাশ, তেলাপিয়া, চাষের কই, রুই মাছের দামও অনেক বেশি। আগে যা কিনেছি এখন একই মাছ বাড়তি দামে কিনতে হয়। পাঙাশ মাছও কিনতে হচ্ছে ২০০/২২০ টাকায়। আগে এটাই কিনেছি ১৬০/১৮০ টাকা কেজিতে। দীর্ঘ দিন ধরে এই মাছের দাম আর কমছে না। আর এসব মাছের দামও যদি এতটা বেড়ে যায় তাহলে আমরা নিম্নআয়ের ক্রেতারা কীভাবে কিনব?
অন্যদিকে মাছের দাম কেন এত বাড়তি- এই প্রসঙ্গে মহাখালী বাজারের মাছ বিক্রেতা আলমগির হোসেন বলেন, আসলে বাজারে সব ধরনের মাছের দাম বাড়তি যাচ্ছে। মাছের খাবারের দাম বাড়ার পর থেকে মাছের দামও বেড়েছে। এছাড়া পরিবহন খরচও এখন বাড়তি। সব মিলিয়ে পাইকারি আড়ত থেকেই আমাদের আগের চেয়ে বাড়তি দামে মাছ কিনতে হচ্ছে। যার প্রভাব খুচরা বাজারগুলোতেও পড়েছে।
এএসএস/এমএ