রোজায় চাঙা রেমিট্যান্স, দিনে আসছে ৭ কোটি ডলার
প্রতিবছর রমজান মাসে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ে। এবারও ব্যতিক্রম হচ্ছে না। রোজার শুরু থেকে বেশি বেশি রেমিট্যান্স আসছে। এ মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত বৈধ বা ব্যাংকিং চ্যানেলে ৪৭ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশে এসেছে। দৈনিক গড়ে এসেছে ৬ কোটি ৮১ লাখ ডলার। চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাস শেষে রেমিট্যান্স ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে।
রোববার প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
>>ডলার কেনাবেচায় আগ্রাসিভাব, পেছনে ১০ ব্যাংক!
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি মাসের প্রথম ৭ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৭৬ দশমিক ৮৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (৪৭ কোটি ৬৯ লাখ ডলার)। তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬ কোটি ১২ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ১ কোটি ২৮ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪০ কোটি ১৪ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৪ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গেল মার্চ মাসে বৈধ পথে ২০১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা ধরে) যার পরিমাণ ২১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। যা আগের মাসের চেয়ে ৪৫ কোটি ৭২ লাখ ডলার বেশি। ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলার।
>>সাত মাস পর ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রেমিট্যান্স
এছাড়া আগের বছরের (২০২২ সালের) মার্চের তুলনায় রেমিট্যান্স বেড়েছে ৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ বা ১৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার। গত বছর মার্চে প্রবাসী আয় ছিল ১৮৫ কোটি ৯৭ লাখ ডলার।
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম (জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত) ৯ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৬৩০ কোটি মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৫২৯ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে ৭৪ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স বেশি এসেছে।
২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।
>>বাড়ল ডলারের দাম, রপ্তানিতে মিলবে ১০৫ টাকা
রেমিট্যান্স বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সর্বশেষ সেবার বিনিময়ে দেশে রেমিট্যান্স আয় আনতে ফরম সি পূরণ করার শর্ত শিথিল করেছে। পাশাপাশি সেবা খাতের উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের ঘোষণা ছাড়াই ২০ হাজার মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে আছে বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা দেওয়া, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করার পাশাপাশি অনাবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ন অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা এবং রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা প্রভৃতি।
এসআই/এমএ